Image description

সুদানের প্রধান সেনা কর্মকর্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন। আফ্রিকান দেশটিতে ৩০ মাস ধরে চলমান ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টার মধ্যে এই প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। সেনাবাহিনী রবিবার রাতে প্রকাশিত ভিডিওতে জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান প্রস্তাবটিকে ‘এ পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ নথি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

আফ্রিকান বিষয়ের মার্কিন উপদেষ্টা মাসাদ বুলোস দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, সর্বশেষ প্রস্তাব অনুযায়ী প্রথমে তিন মাসের মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং পরে নয় মাসের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।

প্যারামিলিটারি র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে। আল-ফাশির শহরে তাদের নৃশংসতার কারণে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের পর তারা এটি মানতে রাজি হয়েছে। 

তবে আল-বুরহান বলেন, ‘প্রস্তাবটি এ পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ ‘নথি’ হিসেবে ধরা হয়, কারণ এতে ‘সশস্ত্র বাহিনী বিলুপ্ত হচ্ছে, নিরাপত্তা সংস্থা ভেঙে যাচ্ছে এবং মিলিশিয়াকে তাদের অবস্থানে রাখা হচ্ছে, এটি-আরএফকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে।’ তিনি মার্কিন উপদেষ্টার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি আমাদের ওপর ‘কিছু শর্ত চাপানোর চেষ্টা করছেন।

’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি যে মাসাদ বুলোস সুদানের জনগণের প্রত্যাশিত শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন।’

সুদানে ২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও শক্তিশালী আরএসএফ-এর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই রাজধানী খার্তুম এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় সংঘর্ষে রূপ নেয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তবে ত্রাণ সংস্থা বলছে, প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।

এই সংঘাত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে, যার কারণে ১৪ মিলিয়নের বেশি মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে এবং দেশের কিছু অংশ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। 

এই মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সুদানের যুদ্ধে সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করার ওপর আরো মনোযোগ দেবেন। এটি তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের হোয়াইট হাউস সফরের সময় নেওয়া অনুরোধের পর পরিকল্পনা করেছেন। আল-বুরহান বলেন, সেনাবাহিনী শুধুমাত্র তখনই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে যখন আরএফএফ সম্পূর্ণভাবে নাগরিক এলাকা ত্যাগ করবে এবং বাস্তুচ্যুত মানুষদের তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে সুযোগ দেবে, তারপর রাজনৈতিক সমাধানের জন্য আলোচনায় বসবে।

তিনি বলেন, ‘আমারা যুদ্ধ পছন্দ করি না এবং আমরা শান্তি প্রত্যাশা করি, কিন্তু কেউ আমাদের হুমকি দিতে পারে না বা আমাদের ওপর শর্ত চাপাতে পারে না।’

সূত্র : আলঅ্যারাবিয়া।