মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের কৃতি সন্তান হাফেজা হুমায়রা মাসুদ। ‘ইন্দোনেশিয়ান কুরআন রিসাইটারস অ্যাসোসিয়েশন’ আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় ১২টি দেশের ১৪৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেন।
নারীদের জন্য নির্ধারিত বিভাগে হুমায়রা মাসুদ প্রথম স্থান অর্জন করেন। একই বিভাগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার আয়েশা ইজ্জত মুসলিমা ও কায়রানি নফসুল মুতমাইন্না।

অন্যদিকে, পুরুষদের বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন নাইজেরিয়ার বশীর উসমান ইমাম। ইন্দোনেশিয়ার মুহাম্মাদ তাওফীক হাকীম ও সওলা মুহাম্মাদ দিয়া আল হক যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান লাভ করেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ইসলামী কায়রোর ঐতিহ্যবাহী এল-মুস্কি এলাকার আর-রাওযাহ আল-হুসাইনিয়া প্রাঙ্গণে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেন আল-আজহার মসজিদের ইমাম ও কারি শায়খ ফাওযী আল-বারবারী আজহারী।

হুমায়রা মাসুদ এর আগে ২০১০ সালে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। পরে ২০২৫ সালে মিশরের ওয়াক্ফ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৩১তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬০টি দেশের প্রতিযোগীর মধ্যে অনারব বিভাগের পঞ্চম স্থান লাভ করেন তিনি।
স্ত্রী হুমায়রার এমন সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করে তার স্বামী মাওলানা মাসুম বিল্লাহ গুলজার আজহারী বলেন, এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবময় অর্জন। ইন্দোনেশিয়ান কোরআন রিসাইটারস অ্যাসোসিয়েশনের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার বিজয় কেবল ব্যক্তিগত প্রতিভার স্বীকৃতি নয় বরং বাংলাদেশের ধর্মীয় সংস্কৃতি, তিলাওয়াতের ঐতিহ্য এবং কোরআনপ্রেমী জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদাকেও বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল করেছে।

তিনি আরও বলেন, হুমায়রা মাসুদের এই অর্জন প্রমাণ করে—বাংলাদেশের মেয়েরাও আন্তর্জাতিক পরিসরে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম। আমি সকলের কাছে দোয়া কামনা করি—আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে কোরআনের খেদমতে কবুল করেন।
চাঁদপুরের সন্তান হাফেজা হুমায়রা মাসুদ নারায়ণগঞ্জের উম্মে আইমান (রা.) আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসা থেকে হিফজ সম্পন্ন করেন। পরে জামিয়া ইব্রাহিমিয়া আমিনিয়া মহিলা মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে তিনি মিশরের ঐতিহ্যবাহী আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক থিওলজি অনুষদে অধ্যয়নরত।