Image description
 

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করে নতুন এক সংকটের পথে হাঁটছে ইরান। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে গৃহীত একটি বিল অনুমোদন করেছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এর ফলে এখন থেকে আইএইএ’র পরিদর্শকরা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত দেশটির সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠার অংশ এবং তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা অটুট রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য।

তবে এ সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় ফেরার সুযোগ এখনো আছে, কিন্তু ইরান উল্টো পথে হাঁটছে।’ তিনি আরও বলেন, “আইএইএ’র সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া ইরানের সামনে কোনো বিকল্প নেই। ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না—এটাই যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট বার্তা।”

 

ব্রুস অভিযোগ করে বলেন, ইরান ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক পরিদর্শন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করছে, যা ভবিষ্যতের জন্য আরও বেশি বিপদ ডেকে আনতে পারে।

 

এদিকে, পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানিয়েছেন, গত মাসে মার্কিন বিমান হামলার ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অন্তত দুই বছর পিছিয়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, ‘ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।’

তবে এই অবস্থানকে গুরুত্ব না দিয়ে, নিজেদের কৌশলগত পরিকল্পনায় অনড় রয়েছে তেহরান। দেশটির পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামী বলেন, ‘কোনো বোমা মেরে ইরানের পরমাণু শিল্প ধ্বংস করা যাবে না। এটি এখন আমাদের জাতীয় সক্ষমতার প্রতীক।’

ইসলামী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা জাতিসংঘ সনদের সরাসরি লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক সহনশীলতা ক্ষুণ্ন করছে, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এই সংকট শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছায়, নাকি তা আরও বড় সংঘর্ষের ইঙ্গিত বহন করে।