রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসায় শনিবার রাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওবায়দুল হক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
শনিবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিষয়টা ছিল ১৭ নভেম্বর রায় (মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায়) ঘোষণার পর সারা দেশ উচ্ছ্বাস করেছে। আলিয়া মাদ্রাসার ছেলেরা অনেকে টিএসসিতে গিয়েছে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়েছে। এখানে তেমন কিছু (আয়োজন) করেনি।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার বিল্পবী ছাত্র পরিষদের একজন শিক্ষার্থী বলেছেন যে, স্যার আমরা মার্কেটের সামনে একটা মিলাদ মাহফিল করবো। আমি জানতে চাইলাম যে, কীসের মিলাদ, এখন তো মিলাদের সময় না। তখন শিক্ষার্থী বলল যে, রায়ের খুশিতে মিলাদ মাহফিল করবো। তখন তাকে বললাম যে, ঠিক আছে করো, তবে কাউকে ডিস্টার্ব করো না।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীকে এও বলেছিলাম যে, মিলাদ মসজিদে হওয়া উচিৎ। তখন শিক্ষার্থী বলল যে, স্যার রায়ের পর আমরা প্রকাশ্যে কিছু করিনি। এটা করে উচ্ছ্বাস করতে চাই। তখন তাকে করার মৌখিক অনুমতি দিলাম। বললাম যে, সকলকে নিয়ে করো।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা মিনি ট্রাক দিয়ে সড়ক আটকে মাইক লাগিয়ে মাহফিল করেছে। এগুলো সরাসরি আমি দেখিনি। ছবিতে দেখেছি। তবে এতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেউ ছিল না বোধহয়। মাহফিলে অংশ না নেওয়া শিক্ষার্থীরা গিয়ে অভিযোগ করে যে, মাইক বাজায় তাদের পড়াশোনায় ডিস্টার্ব হচ্ছে। তখন আমি আয়োজন সংগঠনের শিক্ষার্থীদের ফোন দিয়ে বললাম যে, তোমাদের মিলাদ কি শেষ হয়নি। আর মাইকে তো মিলাদ জায়েজ না।’
সাংবাদিকরা অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান যে, ‘ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল অভিযোগ করেছে যে, হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা থাকেন’ এটি আপনি অবগত কি-না? আজকের মূল ঘটনা কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে? হতাহত কেমন, এবং মাদ্রাসার পাশের দোকানগুলো থেকে চাঁদা উঠানোকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে কি-না? উত্তরে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি জানি না যে কে ছাত্রলীগ করে? যারা বলছে তারাও তো আমাকে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত করে দিতে পারেনি যে। কারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’
দোকান থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেই জড়িত থাক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়টি দেখছি।’
ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ বিষয় জানতে তদন্ত কমিটি করা হবে কি-না, এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রিন্সিপাল বলেন, ‘নিশ্চয়ই তদন্ত কমিটি করা হবে। ঘটনার বিষয় বের করতে গাইড লাইন দেওয়া হবে।’
হলে ভাঙচুর হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘দুয়েকটা চেয়ার উল্টাপাল্টা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি।’