Image description

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত ঘটনার পর মানুষ সেই দিনটিকে নাজাত দিবস হিসেবে পালন করেছিল। এর আগে শেখ মুজিবের শাসনামল ছিল একটি বিভীষিকাময় সময়—এমন মন্তব্য করেছেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার ও সাবেক সচিব মো. মনিরুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর ২০২৫) আশুলিয়ায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায় প্রশাসন ও অর্থনীতি অনুষদের ডিন মো. মাহবুব আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও দীর্ঘদিন প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি। ফলে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী এই দ্বিতীয় বিজয় দিবস আমাদের জীবনে এক নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের পর সাড়ে তিন বছরের সরকারের শাসনামল ছিল একটি বিভীষিকাময় সময়। সে সময় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ছিল না; মানুষ রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারত না। রক্ষী বাহিনীর নির্যাতনে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। এরই পরিণতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনা সংঘটিত হয়। তখন মানুষ সেই দিনটিকে নাজাত দিবস হিসেবে পালন করেছিল।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে তারুণ্যের ঐক্য আমাদের সামনে নতুন এক স্বাধীনতার সূর্য উদিত করেছে। সেই ঐক্য অটুট রেখে, সেই সূর্যের আলোয় আমরা আলোকিত হবো—এটাই হোক বিজয় দিবসের অঙ্গীকার ও প্রত্যয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. মাহবুব আলম বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম, তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা একটি কঠিন ও সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে আবদ্ধ ছিলাম। সেখান থেকে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের উদ্ধার করেছেন। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি মিরাকল বা মোজেজা। এই মিরাকল স্থায়ী হবে—আজকের বিজয় দিবসে এটাই হোক আমাদের সবার প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকার কারণেই সমাজে বিভাজন ও অনৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে। একাত্তরের আগে ও পরে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে সঠিক গবেষণা ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করা হলে সমাজে বিদ্যমান বিভাজন ও অনৈক্য অনেকাংশে দূর হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ. এইচ. এম. আবু সাঈদ, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. মাহবুবুল ইসলাম, সিজিইডির সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান রফিকুজ্জামান রোমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। একই সঙ্গে জুলাই বিপ্লবে আহত ও গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদির সুস্থতা কামনা করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক কামরুজ্জামান খিজরি।