ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু। তিনি জানিয়েছেন, ওসমান হাদির অবস্থা আগের চেয়েও অনেক খারাপ। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে তার চুল নিয়েও আবেগঘন কথা লিখেছেন মাহমুদা মিতু।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে নিজের চুল নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন ওসমান হাদি। সেটি শেয়ার করে মাহমুদা মিতু লিখেছেন, ‘এভাকেয়ার থেকে ফিরলাম। দুদিন আগেও যে চুলের মায়া হাদি করেছিল, সেই চুল কি মাথায় আছে? ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে বসে প্রথম যখন ওর গুলির এক্সিট পয়েন্ট পাচ্ছিল না, তখন বার বার বলছিল, চুল ফেলে দাও। তারপর ওটিতে তো ফেলে দিতেই হলো। ইউ এস থেকে যে ভাই বলছিলেন, চুল ফেলে দিলে হাদিকে ভোট দিবেন, আপনার ভোটটা কিন্তু পাওনা রয়ে গেল...।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমার কাছে আপডেট জানতে চান অপেক্ষা করেন, তাই লিখি। এছাড়াও আপনাদের কমেন্টের দোয়া দেখলে দুই-একটা কমেন্ট পড়লে আমার ভালো লাগে। হাদির অবস্থা আগের চেয়েও অনেক খারাপ আজকের সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কের ফোলা আগের চেয়ে অনেক বেশি।আগামীকাল (সোমবার) সকালে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাবে।’
এ ধরনের রোগীদের কামব্যাক করার চান্স নেই বললেই চলে জানিয়ে মাহমুদা মিতু বলেন, ‘তবুও আমাদের সব চেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত। আল্লাহ যদি মুখ তুলে তাকান...। এই আইডিতে আমার অনেক অচেনা আপন মানুষ আছে। রক্তের সম্পর্কের বাইরেও মানুষ কত আপন হয়, সেটা হাদি আমাকে শিখিয়েছে। আমি জানি, আপনারা আমাকেও অনেক ভালোবাসেন। আমার জন্য অন্যের কমেন্টে যুদ্ধ করেন. প্রতিবাদ করেন, দোয়া করেন।’
তিনি বলেন, ‘হাদির জন্য আমার কেমন লাগছে, এটা আমি কাউকে বোঝাতে পারব না। আমার ঘরে মা আছে, বাচ্চারা আছে, আমার বুকটা এত ভারি হয়ে আছে যে, আমি মানুষের সামনে কাঁদতেও পারছি না। হয়তো আমার মতো অনেকেই এমন অবস্থায় আছেন। এজন্য লিখি আপনাদের কমেন্ট পড়ি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই আমার ইলেকশন প্রচারণার জন্য নক দিচ্ছে, অনেকেই হাদির গুলির পরের দিন প্রচারণা করেছে, কিন্তু আমার মানসিক শক্তি এমন নেই। আল্লাহ কি আমার ওপর নারাজ হচ্ছেন? আমার ঈমানি শক্তি কি কমে গেছে? ইমানদারগণ তো আল্লাহ সব সিদ্ধান্তে আলহামদুলিল্লাহ বলে। কিন্তু আমার বুকের ব্যথা তো কমে না। উল্টো হাদির ভাই ওমর আমাকে শান্তনা দিচ্ছে।’
‘কি চমৎকার সন্তান জন্ম দিয়েছেন হাদির বাবা। চার খলিফার তিন খলিফাই হাদির বাবার ঘরে। আবু বক্কর, ওমর, ওসমান হাদি। বলে,আপু আমরা কেউ মৃত্যুকে ভয় পাই না। কি সহনশীল স্ত্রী পেয়েছেন হাদি। হাদির ভাই ওমর ভাই বলে, আপু আমাদের অনেক দায়িত্ব। কিন্তু আমি কেন এত ভেঙে গেছি? আল্লাহ আমাকে কি বোঝাতে চাচ্ছেন? কিসের ইশারা দিচ্ছেন?’, যোগ করেন মাহমুদা মিতু।