ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি একই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
তিনি বলেছেন, হাসপাতালে যারা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তারা হাদীর সমর্থক নয়; তারা অন্য একটি দলের লোক। আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশনা পেলে তোমাদের তুলোধুনো করে দিত। কিন্তু আমরা শান্ত ছিলাম বলেই হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হয়নি।
হাদিকে গুলি ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, হাদি আমার সন্তানের মতো। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি। এ আঘাত শুধু একজন মানুষের ওপর নয়, গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। যারা এই হামলা করেছে, তাদের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে।
তিনি বলেন, দুপুর ২টায় হাদি গুলিবিদ্ধ হয়। আধা ঘণ্টা পরই একটি দল ফেসবুকে উত্তেজনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পোস্ট দেওয়া শুরু করে। হাসপাতালে গিয়ে আমি দেখেছি—সবই ছিল পরিকল্পিত। আমি ঢাকার ছেলে, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ঢাকায় রাজনীতি করি। আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশনা পেলে তোমাদের তুলোধুনো করে দিত। কিন্তু আমরা শান্ত ছিলাম বলেই হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হয়নি।
গুলিবিদ্ধ হাদিকে দেখতে গতকাল শুক্রবার ঢামেকে তোপের মুখে পড়েন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস। ছবি : আমার দেশ
মির্জা আব্বাস বলেন, হাসপাতালে যারা এসব করেছে, তারা হাদির সমর্থক নয়। তারা চেয়েছিল হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হোক এবং সে মারা যাক। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ষড়যন্ত্র আমরা ১৯৭১, ১৯৮৬-সহ বহুবার দেখেছি। এদের মূল শক্তিই ষড়যন্ত্র। এরা স্থিতিশীল রাষ্ট্র সহ্য করতে পারে না, তাই সব সময় রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল রাখতে চায়।
তিনি বলেন, একজন মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে—সে যেই হোক, আমি তার মৃত্যু কামনা করি না। কিন্তু হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এক-দেড় শ লোক ফেসবুকে দেশে মব সৃষ্টির জন্য উসকানিমূলক পোস্ট দিয়েছে। তারা সবাই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের। আমি ১৯৭৭ সাল থেকে নির্বাচন করে আসছি। কখনো কারও সঙ্গে মারামারি করিনি। আমরা একসঙ্গে প্রার্থীরা কোলাকুলি করেছি, খেয়েছি। মারামারি করে আওয়ামী লীগ এবং সেই বিতর্কিত রাজনৈতিক দলই নির্বাচন ও রাষ্ট্রকে অস্থির করে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা চাই হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক এবং একটি বিশেষ দলের মুখোশ উন্মোচিত হোক। হাদি আমার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সে একজন প্রতিযোগী। সে রাজপথের সাহসী সৈনিক। তাকে আবারও নির্বাচনি মাঠে সক্রিয় দেখতে চাই।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।