Image description
 

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মেঘনার চরের প্রায় ১৩০০ একর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। তাদের কবল থেকে জমি দখলমুক্তি চেয়ে সোমবার সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন দুই শতাধিক কৃষক। এর আগে শুক্রবার ১০ জন কৃষক পৃথকভাবে উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী ইউপির সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ বিএনপির স্থানীয় ২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে সোমবার বিকালে থানায় বৈঠক থাকলেও দখলে জড়িত বিএনপির নেতারা উপস্থিত হননি। এ কারণে চরের জমি দখলমুক্ত চেয়ে রায়পুর বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে কৃষকদের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক হয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় হয়ে সেনাক্যাম্পের সামনে যায়। সেখানে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়।

এ সময় কৃষকরা বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গাজী, মোবারক আলী, বাদশা গাজী ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ হাওলাদার, বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ, উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামিম দলবল নিয়ে চরের জমি দখল করেছেন।’ তবে সোমবার রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল ইসলাম মিঠু ও সফিকুর রহমান ভুঁইয়া জানান, সাবেক এমপি খায়ের ভুঁইয়ার নির্দেশে তিনজন অ্যাডভোকেটসহ ৬-৭ জনের একটি কমিটি করা হয়েছে। তারা ৩-৪ দিনের মধ্যে মেঘনার চরের কৃষকদের সমস্যা সমাধান করে দেবেন। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা কৃষকদের উত্তেজিত করে মিথ্যা অভিযোগ এনে বিএনপির সুনাম নষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার নতুন কানিবগারচর, চরকাচিয়াসহ কয়েকটি চরে প্রায় ১৩০০ একর জমি রয়েছে। এখানে ব্যক্তি মালিকানা ছাড়া বন্দোবস্ত নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। কৃষক লিটন মিয়া ও গণি মিয়া জানান, বিএনপি নেতা মোস্তফা গাজি, বাদশা গাজী, মোবারক আলী, শামীম গাজী, হারুন হাওলাদাররা তাদের জমি দখলে নিয়েছেন। তাদের অত্যাচারে কৃষকরা অতিষ্ঠ। বাধ্য হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তাদের কারণে চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মোস্তফা গাজী বলেন, ‘আমি কারও জমি দখল করিনি। কাউকে মারধর করিনি। বিএনপির কেউ দখলের সঙ্গে জড়িত নন।’

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক বাদশা গাজী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুতির পর চরে যেন কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি। বহিষ্কৃত জামায়াত নেতাসহ কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে চরের জমি দখলের সঙ্গে আমার নাম জড়িয়েছেন। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই।’ রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ১০ জন কৃষক পৃথকভাবে বিএনপির ২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চরের জমি দখলের অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে সোমবার বিকালে বৈঠকের কথা ছিল। চরবংশীর বিএনপির নেতারা উপস্থিত না হওয়ায় বৈঠক হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, মেঘনার দুর্গম চরগুলোতে কৃষকদের হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। কৃষকদের প্ল্যাকার্ডে কিছু দখলদারের নাম দেখেছি। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।