প্রয়াত লেখক ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান নিখোঁজের পর অভাবে গাছের পাতা খেয়েও দিন কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী ও বর্ষীয়ান অভিনেত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।
তিনি বলেন, “এমনও দিন গেছে সন্তানদের নিয়ে গাছের পাতা খেয়েছি। কারণ, তখন প্রায় সময়ই খাবার জুটতো না। তারপরও হাল ছাড়িনি। সন্তানদের মানুষ করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল, তারা তাদের বাবার মতোই মানবিক ও দেশপ্রেমিক হবে। রাজনীতি না করলেও রাজনৈতিক আদর্শ লালন করে মানুষের জন্য কাজ করবে। আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। তারা তাদের বাবার মতোই হয়েছে।”
রবিবার জাতীয় (৯ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে ঢাকা-১৭ আসনে জহির রায়হান ও সুচন্দা দম্পতির ছোট ছেলে তপু রায়হানের প্রার্থিতা ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সুচন্দা বলেন, “দেশ স্বাধীন করতে যখন মাঠে নেমছিলাম, তখন পায়ে জুতা ছিল কিনা তা খেয়াল করিনি। আমাদের লক্ষ্য ছিল, একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধ দেশ গড়বো। তখন সংসদ কী তা বুঝতাম না।”
তিনি আরও বলেন, “জহির রায়হান রাজনীতি করতেন না, তবে রাজনীতি লালন করতেন সব সময়। তার লেখনি ও চলচ্চিত্রে সব সময় দেশ ও মানুষের কথা থাকতো। তিনি সব সময় নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করতেন।”
সুচন্দা বলেন, “আমাদের ছেলে ছোট ছেলে তপু রায়হান বাবাকে দেখেনি। কিন্তু তার মধ্যে আমার স্বামী জহির রায়হানের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। সে সুযোগ পেলেই মানুষের কল্যাণে ছুটে যায়। তাই ঢাকা-১৭ আসনে এবার তার নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে আমি খুশি হয়েছি। হার-জিত থাকবেই। আমার বিশ্বাস সে মানুষের সমর্থন পাবে।”
তপু রায়হান বলেন, “আমার বাবা রাজনীতি না করলেও তার লেখায় রাজনৈতিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ দেখা যেতো। আমি মনে করি, রাজনীতি না করেও জনগণের পাশে থাকা যায়। সে বিষয়টি উপলব্ধি করেই নিজে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করতে চাই। তবে আপাতত কোনও দলে যোগ না দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই “
তিনি বলেন, “আমি জানি, গুলশান ও বনানী একটি অভিজাত এলাকা। সেখানের মানুষের সমস্যা আমি জানি। তাছাড়া, এখানে পিছিয়ে পড়া জনপদ কড়াইল বস্তির মানুষেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় এখানের মানুষ অনেক পিছিয়ে। তাই নির্বাচনের সিদ্ধান্তের পর থেকেই এলাকাভিত্তিক নিজের ইশতেহার ঘোষণা করেছি।”
তপু রায়হান বলেন, “নির্বাচনে হেরে গিয়ে গেলেও বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে আলোচনা করে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জনগণ আমাকে সব সময় সরাসরি কাছে পাবেন। আমি সহযোগিতার নতুন দিগন্ত চালু করতে চাই। আমি থেকে আমরা হতে চাই।”