Image description

গুলিতে মারা যাওয়া সরওয়ার হোসেন বাবলার ছোট ভাই ইমরান খান ওরফে আজিজও পেলেন এবার খুনের হুমকি। তার সঙ্গে টার্গেট রয়েছে নাছির উদ্দিন চৌধুরী ওরফে ‘শিবির নাছির’ও। মুঠোফোনে আসা এইসব হুমকিতে আজিজকে সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র এক মাস। বাবলা নিহতের পেছনে বিএনপি এক নেতার নাম বলার পর থেকেই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নাম্বার থেকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাবলার এই ছোট ভাইয়ের।

তবে শিবির নাছির আমার দেশকে জানিয়েছেন, তার সঙ্গে বড় সাজ্জাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। নিজে এখন পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। আর কেউ যদি মেরে ফেলে, তাহলে মৃত্যু কবুল করে নিয়েছেন বলে জানান টানা ২৬ বছর কারাভোগের পর গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্ত এই নাছির।

শুক্রবার রাতে বায়েজিদ থানার চালিতাতলী খন্দরপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে আমার দেশের এই প্রতিবেদককে বলেন, বাবলাকে ওই বিএনপি নেতাই মেরে ফেলেছে। তার দলে যোগ না দেওয়ায় এই হত্যার কারণ। তার সঙ্গে এইট মার্ডার মামলার আসামি ভারতে পালিয়ে থাকা বড় সাজ্জাদের যোগাযোগও রয়েছে। বড় সাজ্জাদের এবার নাকি টার্গেট আমি এবং শিবিরের নাছির।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান পুলিশের তালিকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা। গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম ৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ’র গণসংযোগে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন তিনি। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহও।

বাবলার ভাই আজিজ একসময় কাতার প্রবাসী ছিলেন। ৫ বছর আগে করোনা ভাইরাসের সময় দেশে ফিরেন। এখন ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। আজিজ আমার দেশকে বলেন, আমার ভাইয়ের খুনিরা এরশাদউল্লাহ’র সঙ্গেই এসেছিল। তারা ব্যাকআপ টিমও রেখেছিল। বিভিন্ন পয়েন্টে ১২-১৫ জন শস্ত্র অবস্থানে ছিল। বড় সাজ্জাদের অনুসারী রায়হান আমার ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলেছে।

তার নাম বলার পর থেকে নিজের মুঠোফোনে হুমকি পাচ্ছেন জানিয়ে বলেন, আমি নাকি আর কয়েকমাস বাঁচবো। আমার ভাইকে নাকি মেরে ফেলছে ঘাড় টেরা সেজন্য। আমিও নাকি ঘাড় টেরা। আমার সঙ্গে তারা শিবির নাছিরওকে নাকি মেরে ফেলবে।

র‍্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্ত নাছির একসময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় ‘শিবির নাছির’ নামের পরিচিত হয়ে ওঠেন। কারা সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল থেকে কারাগারে ছিলেন নাছির। দীর্ঘ ২৬ বছর পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। গত বছর শেখ হাসিনা পালানোর পর রাজত্ব ফিরে পেতে মরিয়া বড় সাজ্জাদ। যিনি চট্টগ্রামে আলোচিত এইট মার্ডার মামলার আসামি। বর্তমানে ভারতের পাঞ্জাবে রয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। তিনিও একসময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এই প্রসঙ্গে শিবির নাছির আমার দেশকে বলেন, আমিতো কারো সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। নিজের সংসার নিয়ে আছি। আর সাজ্জাদের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্বও নেই। যদি কেউ মেরে ফেলে, তাহলে মেরে ফেলুক। আমি-তো মৃত্যু অনেক আগেই কবুল করে ফেলেছি।

গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকার পাড়া এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। এসময় পাশে থাকা সরওয়ার হোসেন বাবলার ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ৬ রাউন্ড গুলি করা হয়। এতে মারা যান বাবলা।

 

পুলিশ সূত্র বলছে, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট সাজ্জাদের অনুসারী রায়হান গ্রুপ। অথচ ছোট সাজ্জাদ বর্তমানে স্ত্রীসহ কারাগারে। সেখান থেকেই অপরাধের নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। আজ শুক্রবার র‌্যাব এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।