সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ ও কুক্ষিগত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে ফ্যাসিবাদ কায়েম করে খু'নী হাসিনা। এই ত্রুটিপূর্ণ সিস্টেম পরিবর্তনে জুলাই আকাঙ্ক্ষার আলোকে জুলাই সনদে ৮৭ টি মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
এই সংস্কার প্রস্তাবনায় একক দল হিসেবে বিএনপি সর্বোচ্চ নোট অব ডিসেন্ট তথা ১৯টি প্রস্তাবে লিখিত আপত্তি জানিয়েছে। কেবল তাই নয়, এই ১৯টি প্রস্তাব যেন গণভোটে না পাঠানো হয়, সে চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে জামায়াত ৬টি এবং এনসিপি একটি প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে।
যেসব মৌলিক সংস্কারে বিএনপির আপত্তি তার অন্যতম হচ্ছে:
সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ, ন্যায়পাল নিয়োগ, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ, দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ, স্বতন্ত্র ফৌজদারী তদন্ত সার্ভিস গঠন, আইনজীবী সমিতি ও বার কাউন্সিল নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব বিলোপ এবং তিনটি সরকারি কর্ম কমিশন গঠনের বিরোধিতা করে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করেছে বিএনপি।
জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত আন্তজার্তিক চুক্তি আইন সভার উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ট ভোটের মাধ্যমে অনুমোদন করা, জাতীয় সংসদের সদস্যগণ কেবল অর্থবিল এবং আস্থা ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতি অনুগত থাকবে; অন্য বিষয়ে স্বাধীন ভাবে ভোট দিতে পারবেন, স্বাধীন বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন গঠন, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ইত্যাদি প্রস্তাবেও আপত্তি বিএনপির।
যেসব প্রস্তাবে জামায়াতে ইসলামী নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে তা হলো: স্থানীয় পর্যায়ে সকল উন্নয়নমূলক কাজের উপর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ আর্থিক নিয়ন্ত্রণ এবং বাস্তবায়নের কর্তৃত্ব থাকা, সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা ইত্যাদি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির নোট অব ডিসেন্ট: জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির পদ্ধতিতে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করেছে এনসিপি।
ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় সকল রাজনৈতিক দল একটি মতৈক্যে (নোট অব ডিসেন্টসহ) পৌঁছায়। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলসমূহ জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু তা গণভোটে পাঠানোকে কেন্দ্র করে পুনরায় রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা, অসহযোগীতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
জুলাই প্রজন্ম ও দেশের আপামর ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে বিএনপি, জামায়াত সহ সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান জানাতে চাই- একটি সুন্দর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে এসে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করুন। প্রজন্মের আকাঙ্খা উপলব্ধি করুন।
সেই রাজনীতি পরিহার করুন, যে রাজনীতিতে জনগণের চাওয়া-পাওয়া উপেক্ষিত থাকে