Image description

রাজনীতিমুক্ত বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) সম্প্রতি নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রদল বা কেউ কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবেন না বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির উপাধ্যক্ষ ডা. মো. আনোয়ার হোসেন। এরই মধ্যে তাকেই রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ছাত্রদলের নবগঠিত এ কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে ‘বিএনপি মিডিয়া সেল’ নামক ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত কিছু ছবি প্রচার হয়েছে। যেগুলোর প্রথমটিতে দেখা যায়, উপাধ্যক্ষকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া, বাকী ২ ছবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের মশা মারার স্প্রে প্রদান ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনেরর জন্য সাউন্ড বক্স দিতে দেখা যায়।

বিএনপি মিডিয়া সেলের ফেসবুক পোস্টটিতে বলা হয়, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির পক্ষ থেকে আজকে কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমগ্র ক্যাম্পাসে ফগার মেশিন দিয়ে মশানাশক ঔষধ ছিটানো হয়। একই সাথে, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ শাখা ড্যাবের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসের চলমান ফুটবল টুর্নামেন্টসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন এর লক্ষ্যে নবগঠিত শেবাচিম ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সাধারণ ছাত্রদের জন্য সাউন্ড বক্স প্রদান করা হয়।

এর আগে, গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কলেজ শাখার কমিটির তালিকা ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কমিটি দেওয়ার বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হলে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কমিটি দেওয়ার ব্যাপারটা আমাদের হাতে নেই। এটা সংগঠনের ব্যাপার। তবে ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না। এখন যদি তারা কমিটি দিয়ে দেয়, কমিটি থাকুক; কিন্তু ইনেক্টিভ থাকতে পারবে। এটা তো আর আমাদের হাতে নাই।

ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ব্যানারে মিছিল-শোডাউন চলছে কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমি আপনার কাছে শুনলাম। তারা যদি কার্যক্রম শুরু করে, তাহলে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা যাবে। আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের পরবর্তী সভায় বিষয়টি আলোচনা করব।

অন্যদিকে জানা গেছে, কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক ব্যানার বা পোস্টার লাগানো যাবে না, এ ধারা অব্যাহত থাকবে। একই সাথে ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে ছাত্র, শিক্ষক বা কর্মচারীদের দলীয় ব্যানারে প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না। এ ছাড়া কোনো শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের দলীয় রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ বা উৎসাহিত করতে পারবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

একই সাথে কলেজ ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনৈতিক মিছিল করা যাবে না এবং ছাত্রছাত্রীদের মিছিলে ডাকা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই একাডেমিক সভায়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক, এসব সিদ্ধান্তের কোনো ব্যত্যয় হলে হোস্টেল সুপাররা কলেজ প্রশাসনকে অবহিত করবেন এবং এ ধরনের তৎপরতা চালানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে  অনতিবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।