
জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠ প্রশাসনে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে জামায়াতের মালিকানাধীন আর্থিক ও সেবাপ্রতিষ্ঠান থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার জোর দাবি জানাতে যাচ্ছে বিএনপি।
দলটি বলছে, ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এই প্রতিষ্ঠানগুলো জামায়াতের দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বমহলে চিহ্নিত। ইতিমধ্যে ইসলামী ব্যাংক সারা দেশে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল করেছে এবং এসব শূন্যপদে তড়িঘড়ি করে দলীয় লোকজন নিয়োগের চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)-এর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া বৈঠকে অংশ নেবেন।
বৈঠকে বিএনপি সিইসির কাছে ৩৬ দফা লিখিত প্রস্তাবনা উপস্থাপন করবে। প্রস্তাবে বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে দূরে রাখার দাবি জানানো হবে। এছাড়া, নির্বাচনকালীন প্রশাসনের রদবদল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নির্বাচন কমিশনের শক্তিশালী ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হবে।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, অক্টোবর মাসের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনায় উঠে এসেছে যে, সারা দেশে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ কর্মকর্তার ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরে সম্পৃক্ততা এবং বর্তমানে জামায়াতপন্থি হওয়ার কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনকে সতর্কতার সঙ্গে দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে প্যানেল প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়ার প্রস্তাব রাখবে বিএনপি।
বৈঠকে আরও বলা হবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এখনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নির্বাচন পরিচালনার দাবি জানান হবে। জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র চালু করার পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ ও ভোটকেন্দ্রের প্রাক-কার্যক্রমকে যথাযথভাবে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিএনপি আরও প্রস্তাব করবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি পুনর্নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনা স্থগিত করা হোক। কারণ, তড়িঘড়ি নির্দেশনার ফলে শিক্ষক, অভিভাবক ও ভোটারদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এবং জাতীয় নির্বাচনের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।