
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়ার গাবতলীতে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) গাবতলীর বাগবাড়ীতে আয়োজিত এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
জুবাইদা রহমান বলেন, “মানব সভ্যতার এক ক্রান্তিকালে আমরা পৌঁছেছি। এই সময় আর্তমানবতার সেবায় আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা জরুরি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আত্মত্যাগ ও মানুষের জন্য নিবেদিত পথচলা ইতিহাস হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “স্বল্প সামর্থ্য নিয়েও এ ফাউন্ডেশন বহু মানুষের জীবনে আশার আলো ছড়িয়েছে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও মানবাধিকার রক্ষায় এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, “জনগণের ভালোবাসায় যদি আমরা ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে চিকিৎসাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনব। যাতে আর কোনো রোগী হাসপাতালে মাটিতে পড়ে থাকতে না হয়। দরিদ্র ও অতিরিক্ত রোগীদের জন্য প্রাইভেট হাসপাতালেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।”
তিনি বলেন, “ফ্যামিলি কার্ড ও ফারমার্স কার্ড চালু করে চিকিৎসা ও কৃষি খাতে সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।”
তারেক রহমান আরও বলেন, “জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জনসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে। রাজনীতির মূল লক্ষ্য হতে হবে জনগণের পাশে দাঁড়ানো।”
ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণের জন্য। নারী, শিশু, বয়স্ক, কৃষক ও শিক্ষার উন্নয়নে আমাদের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে—কীভাবে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যায়, তা জানাতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ আলিম ডোনার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ড্যাব বগুড়ার সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. শাজাহান আলী, বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিলটন এবং ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট উপ-কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. ইউনুস আলী।
এদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী চিকিৎসা ক্যাম্পে গাবতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় সাত হাজার অসহায় ও দরিদ্র রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। ১৭০ জন চিকিৎসক, যার মধ্যে ৮০ জন বিশেষজ্ঞ, সারাদিন চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ সরবরাহ করেন।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা ও মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ডে বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে।