Image description

সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর নারী কর্মীদের মোকাবিলায় মাঠে নামছে বিএনপি।

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নারী ভোটারদের লক্ষ্য করে জামায়াত সারা দেশে নিজেদের মহিলা বিভাগের কর্মীদের মাঠে নামিয়েছে। তাঁরা নারী ভোটারদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছে বলে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তথ্য আছে।

জামায়াতের এ কৌশল মোকাবিলায় নারী ভোটারদের লক্ষ্য করে বিএনপিও নারী সম্পৃক্ত কর্মসূচি নিচ্ছে। দলটির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে সরাসরি নয়, বিএনপির এ কর্মসূচি ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’ দিয়ে শুরু হবে। ২০১৯ সালের আগস্টে আত্মপ্রকাশ করা এই ফোরামের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও সদস্যসচিব ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী।

এ কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে, বিএনপির ভাবনাগুলো নারী ভোটারদের সামনে তুলে ধরা। তাঁদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়ে আমরা কথা বলব। নারী ভোটারদের সচেতন করব। এগুলো হচ্ছে আমাদের মূল উদ্যোগ।
নিপুণ রায় চৌধুরী, সদস্যসচিব, নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম

ফোরামের দায়িত্বশীল নেতারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এটি হবে মূলত ঘরোয়া কর্মসূচি। বিএনপি–সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে এ কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে। অর্থাৎ সারা দেশের ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদে বিএনপি–সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের একত্র করে নির্বাচনকেন্দ্রিক কিছু দলীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। কর্মসূচিতে আগামী দিনে বিএনপির ভাবনা, নারীর অধিকার, সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন, বিশেষ করে নারী ভোটারদের সচেতন করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য থাকবে।

ফোরামের নেতারা জানিয়েছেন, ১৪ অক্টোবর খুলনা বিভাগ দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। পরপর তিন দিন খুলনা অঞ্চলের জেলাগুলোয় কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিভাগে কর্মসূচি নেওয়া হবে।

আমরা আমাদের (ফোরাম) ওয়েতে (পদ্ধতিতে) কাজ করছি। আমাদের মূল মেসেজটা হচ্ছে, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, যে নৈতিক অবক্ষয়, সেখান থেকে বের হয়ে একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাইলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষভাবে নির্বাচনে।
সেলিমা রহমান, আহ্বায়ক, নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম

সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, ১৪ অক্টোবর খুলনা জেলা ও মহানগরের পাশাপাশি বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বিএনপি–সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় হবে। পরদিন ১৫ অক্টোবর বৃহত্তর যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইল জেলার সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মসূচি হবে।

১৬ অক্টোবর কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় হবে। এসব কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট জেলার বিএনপির সভাপতি বা আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক বা সদস্যসচিবদের যুক্ত করা হবে। কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকবেন ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমান ও সদস্যসচিব নিপুণ রায় চৌধুরী।

নিপুণ রায় চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে, বিএনপির ভাবনাগুলো নারী ভোটারদের সামনে তুলে ধরা। তাঁদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়ে আমরা কথা বলব। নারী ভোটারদের সচেতন করব। এগুলো হচ্ছে আমাদের মূল উদ্যোগ।’

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, জামায়াত নারী ভোটারদের লক্ষ্য করে ইতিমধ্যে সারা দেশে সংগঠনের নারী কর্মীদের মাঠে নামিয়েছে। এ বিষয়ে মাঠপর্যায় থেকে বিএনপির নেতারা নানা ধরনের তথ্য পাচ্ছেন। এতে বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতাদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের সংগঠিত করে নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে চাইছেন। এ লক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের পাশাপাশি নারী ও শিশু অধিকার ফোরামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নারী ভোটারদের লক্ষ্য করে জামায়াতের নারী কর্মীদের মাঠে নামানোর তথ্য পাওয়ার কথা স্বীকার করেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ জন্যই আমাদের অঙ্গসংগঠনগুলো মাঠে কাজ করছে।আমরা আমাদের (ফোরাম) ওয়েতে (পদ্ধতিতে) কাজ করছি। আমাদের মূল মেসেজটা হচ্ছে, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, যে নৈতিক অবক্ষয়, সেখান থেকে বের হয়ে একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাইলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষভাবে নির্বাচনে।’