Image description
 

নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশ গড়ার কাজে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মহমুদ চৌধুরী।

 

রোববার অস্ট্রেলিয়ার সিডনির লাকেম্বার লাইব্রেরি হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

 

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বিএনপির সর্বস্তরের কর্মি এবং নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানাই। অভিনন্দন আপনাদের। আপানাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বলতে দ্বিধা নেই, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে অনেক কষ্ট করেছেন আপনারা। অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিরা বাংলাদেশের সামগ্রিক বিষয়ে বেশ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। আপনাদের কর্মের সেই রেজাল্ট আমরা পেয়েছি। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।’

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আগামী দিনে নির্বাচন যাতে সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে হয়। নির্বাচনে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে, অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের সহযোগিতা অনেক বেশি প্রয়োজন হবে আমাদের জন্য। আপনাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।‘

তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ জিয়ার গঠিত দল, আপনারা তার আদর্শে বিশ্বাসী। আপনারা কষ্ট করে বিদেশে বিভিন্নভাবে দলের কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে অবদান রেখেছেন। তা অব্যাহত রাখতে হবে।’

বিশেষ অতিথি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুল হক ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সতর্কতার সঙ্গে চখ-কান খোলা রাখতে হবে। কারণ একটি চক্র বাংলাদেশে যেন নির্বাচন না হয়, সে জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের যেন দাতভাঙা জবাব দিতে হয়, এখন থেকে আমাদের কাজ করে যাতে হবে।’

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন যাতে কোনো ক্রমেই ব্যহত না হয়। নির্বাচনে যারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদের বিশ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। জিয়াউর রহমানের প্রত্যাক সৈনিক সে জন্য প্রস্তুত আছে, থাকবে।’

এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশির অভিবাসিরা এবার বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলে সুখবর দেন রাশেদুল হক। তবে প্রক্রিয়া এখনও ঠিক হয়নি।

আর বাংলাদেশের মানুষদের জন্য সুখবর খবর হলো, অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসের জন্য আর দিল্লি যেতে হবে না। এখন বাংলাদেশ থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ভিসার আবেদন করা যাবে। এরই মধ্যে ঢাকায় সে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জনান, রাশেদুল হক। এই প্রক্রিয়ার পেছেনে অস্ট্রেলিয়া বিএনপির অবদান রয়েছে বলে জানান তিনি।

অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এএফএম তাওহিদুল ইসলাম আশা করেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মতোই তারেক রহমান একজন আদর্শবান কাণ্ডারি হবেন। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় জিয়াউর রহমানের কথা বলি। জিয়ার আদর্শের প্রতিচ্ছবি আমরা তারেক রহমানের মধ্যে দেখতে পাই। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেখানে তারেক রহমানের সাধারণ জীবন-যাপনের কিছু চিত্র দেখা যায়। আমি আশা কবর, তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কান্ডারি হলে বাবার মতোই হবেন বলে আশা করি।’

অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি আরও বলেন, ‘জিয়া ছিলেন, সততার মূর্ত প্রতীক। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কাটার জিয়ার প্রশংসা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রীয় প্রেসিডেন্ট। ব্রিটিশ নথিতে দেখা যায়, জিয়ার সততা এবং দেশপ্রেমিকতা ছিল শীর্ষে। অনন্য সাধারণ ভদ্রলোকের এই দল, জাতীয়তাবাদী দল ৪৭ বছরের ত্যাগ, সংগ্রাম ও ঐতিহ্য অতিক্রম করে এই জায়গায় এসেছে, এর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) মোহাম্মদ অমি ফেরদৌস সংক্ষিপ্ত ভাষণে বিএনপির সংগ্রাম, ঐতিহ্য ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন।

জাতীয়তাবাদী দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অস্ট্রেলিয়া বিএনপি শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ৪০জন শিশু এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ শাখার নব অনুমোদিত কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম শিবলি ও সদস্য সচিব বাদশা বুলবুলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন বিএনপি অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পাদক নামিদ ফারহান।

এএফএম তাওহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহ-সভাপতি শাহ আলম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস কাঞ্চন শহীন, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সবুজ। যুব দলের জাহাঙ্গীর আলম ও ফারুক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মশিউর রহমান তুহিন ও জাহিদুর রহমান।