Image description

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘জামায়াত ও এনসিপির মতো দলগুলো বিভিন্ন দাবি পূরণ না হওয়ার কথা বলে যদি নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে চায় তাহলে বেকায়দায় পড়বে বিএনপি।’

বৃহস্পতিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক বিশ্লেষণে এসব কথা বলেন তিনি।

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “একটা রিপোর্ট দেখলাম, ‘জুলাই সনদ ঘিরে বিএনপিকে চাপে রাখতে চায় এনসিপি।’ এনসিপি কি আসলেই বিএনপিকে চাপে রাখতে পারে বা চাপে রাখার মতো সেই শক্তি তার আছে? আমার সন্দেহ আছে।

 
তবে দলটির অবশ্যই গুরুত্ব আছে। তারা যদি কিছু পয়েন্ট নির্বাচনের আগে তুলে ধরে বা কয়েকটি দল যদি নির্বাচনের আগে কিছু দাবি তুলে ধরে বলে যে, দাবি পূরণ না করলে নির্বাচনে যাব না তাহলে কিন্তু বিএনপি বিপদে পড়বে।”

 

তিনি বলেন, ‘বিএনপি চায় সবার অংশগ্রহণে একটা নির্বাচন। এখন জামায়াত-এনসিপির মতো দলগুলো যদি বলে দাবি না মানলে নির্বাচনে অংশ নেব না, তাহলে কিন্তু বিএনপি বেকায়দায় পড়বে।

 
ইতিমধ্যেই বেশ অস্থিরতা দেখা গেছে। জামায়াত বলছে পিআর না হলে নির্বাচনে যাব না, আর এনসিপি বলছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচনে যাব না। এই দুটি বক্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এই দল দুটি যদি নির্বাচনে আসে তাহলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।
 
আর যদি না আসে তাহলে নির্বাচন হবে আওয়ামী লাইনে। বিএনপি কোনোভাবেই শেখ হাসিনার মতো করে সরকার চালাতে চায় না, ক্ষমতায় থাকতে চায় না। এটা পরিষ্কার। সেই কারণেই হয়তো বিএনপিতে অস্থিরতা ও দলটি পাল্টা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে।’ 

 

তিনি আরো বলেন, “এই প্রতিবেদনে কেন বলা হয়েছে, ‘জুলাই সনদ ঘিরে বিএনপিকে চাপে রাখতে চায় এনসিপি।

 
’ অথচ বিএনপি তো এনসিপির চেয়ে বেশি চাপে আছে জামায়াতের কারণে। কারণ জামায়াত সারা দেশে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অবস্থানে আছে।’ 

 

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন, তা নিয়ে মনঃক্ষুণ্ণ হলেও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে তারা দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। এই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের পদ্ধতির ব্যাপারে এনসিপি ছাড় দিতে রাজি নয়। এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ পাঁচজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এই মনোভাবের কথা জানা গেছে। তারা বলছেন, জুলাই সনদের বিষয়টি সুরাহা হওয়ার পর তারা নির্বাচনমুখী কার্যক্রমে মনোযোগ দেবেন।”

‘এনসিপি মনে করে, জুলাই ঘোষণাপত্র, নির্বাচনের সময় নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির চাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছে সরকার। এখন জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিএনপি যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে জন্য দলটির ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চায় এনসিপি। এরই অংশ হিসেবে এনসিপির কোনো কোনো নেতা জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত সময়সীমা নিয়ে ভিন্ন সুরে বক্তব্য দিচ্ছেন। দলটি চাইছে বিএনপি জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত সম্মত হোক। এনসিপির একটি সূত্র জানায়, তারা জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে বিশেষ শোরগোল করেনি, সেটা তাদের দিক থেকে একধরনের ছাড়। এর মধ্য দিয়ে বিএনপিকে একটা বার্তা দিয়েছে তারা, যাতে বিএনপি জুলাই সনদ প্রশ্নে অন্য দলগুলোর চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়। এনসিপির নেতাদের ভাষ্য, অতীতে দেখা গেছে, একচ্ছত্র ক্ষমতার কারণে সরকারি দল বিরোধী দলগুলোকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে ফেলে।’

তিনি বলেন, ‘কাজেই বোঝাই যাচ্ছে, এনসিপি এ ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে লড়াই করবে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিএনপি এ নিয়ে চাপে থাকবে।’