
জাতীয় পার্টিকে ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে রংপুর বিভাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে নেতাকর্মীরা।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, আজ থেকে ঘোষণা করছি রংপুর ডিভিশনে এই দালালচক্রকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। যেখানেই তাদের দেখা যাবে, অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, সেখানেই বাজ পাখির মতো গিয়ে তাদের তুলে নিয়ে এসে দিগম্বর করে রংপুরের রাজপথে দাড় করিয়ে দেয়ার জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দল ভাংগার ষড়যন্ত্র এবং মব ভায়োলেন্সের প্রতিবাদে জেলা ও মহাগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সমাবেশে এই ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে নগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে পায়রা চত্বর, টাউন হল হয়ে আবারও দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভে তিন নেতার কুশপুত্তালিকা বহন করে তাতে জুতা মারা হয়। এছাড়াও নর্থ ভিউ হোটেলের সামনে জুতা মারতে মারতে কুশ পুত্তলিকায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে উল্লাস করেন নেতাকর্মীরা।
পরে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সমাবেশে সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কো- চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির ও আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম মহাসচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক ও মাহবুবার রহমান।
দেশের অবস্থা আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের সাথে তুলনা করে মোস্তফা বলেন, আজকে আমার মনে হচ্ছে আইয়াসেম জাহেলিয়াতের যুগে আছি। মানুষ খুন হচ্ছে। মানুষেকে দিনের বেলা কুপিয়ে মারা হচ্ছে। রাতের বেলা গাড়িতে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। দিনের বেলা এখানেই দুলিত সম্প্রদায়ের ২ জনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলো হলো এই ধরণের ঘটনা ঘটছে। বুড়িরহাটে একটা ১২ বছরের ছেলেক জবাই করে মারা হলো। এটা কি পরিস্থিতি।
বর্তমান আইনশৃঙখলা পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে সমাবেশে মোস্তফা বলেন, বর্তমান অবস্থায় আইনশৃঙখলা পরিস্থিতির যে অবনতি। এই অবনতি যদি থাকে। তাহলে এই আইনশৃঙখলা পরিস্থিতি দিয়ে কিভাবে একটা সুস্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব? এটা আমার মাথায় আসে না। আমি বলতে চাই। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি উন্নতি, পুলিশকে এক্টিভ এবং সাথে সেনাবাহিনী দিয়ে যদি জাতীয় নির্বাচন ধাপে ধাপে করা হয়। তাহলে হয়তো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে পারে। তাছাড়া নয়।
আওয়ামীলীগের মতো জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে দলের দালাল চক্র উল্লেখ করে মোস্তফা বলেন, আওয়ামীলীগকে যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় পার্টিকেও সেভাবে নিষিদ্ধ করার একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জাতীয় পার্টির কয়েকটা দালাল চক্র এটা করছে। যে রুহুল আমীন হাওলাদার শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে পোস্টার বানিয়ে নির্বাচন করেছিল। যে আনিছুল ইসলাম মাহমুদ শেখ হাসিনার আর্শিবাদ পুস্ট হয়ে তার ছবিটা প্রথমে দিয়ে নির্বাচন করেছে। যে চুন্নু শেখ হাসিনার ছবি লাগিয়ে নির্বাচন করেছে। তাদেরকে দিয়ে জাতীয় পার্টিককে ভাঙ্গারও একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্রের দাদভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি। এই চক্রটিকে আমরা রংপুর বিভাগের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
বৈষম্য বিরোধ আন্দোলনের নিজেদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মোস্তফা বলেন, আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে প্রায় ২২ টি মামলা হয়েছে। চারজনকে কারাগারে নেয়া হযেছে। ২ জন শহীদ হয়েছে। তারপরেও আমরা আন্দোলন করেও আমাদেরক ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হচ্ছে। আওয়ামীলীগের মতো আমাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। কখনও বাস্তবায়ন হবে না।
সকল অবস্থাতেই জিএম কাদেরের পক্ষে রংপুর বিভাগ জাতীয় পার্টি থাকার ঘোষনা দেন তিনি।