Image description

জুলাই গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। আবেদনের ছয় মাস পর শুধু সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করেছে ইন্টারপোল। এখনো ঝুলে আছে ১১ জনের নোটিস। অথচ বিদেশে পলাতক ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে পৃথক তিনটি ধাপে আবেদন করা হয়।

শেখ হাসিনাসহ যাঁদের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি ঝুলে আছে তাঁরা হলেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, আ ক ম মোজাম্মেল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মহিবুল হাসান চৌধুরী, শেখ ফজলে নূর তাপস, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নসরুল হামিদ এবং মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালত থেকে বিভিন্ন মামলায় ওয়ারেন্ট বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

জানা যায়, বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানান, আদালত, প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) অথবা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা ইন্টারপোলে রেড নোটিস জারির আবেদন করে থাকে। শেখ হাসিনাসহ যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির আবেদন করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে করা আবেদনে আর্থিক অপরাধের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। আর অন্যদের বিরুদ্ধে করা আবেদনে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য-উপাত্ত যুক্ত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির জন্য ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করতে গত বছরের নভেম্বরে পুলিশ সদর দপ্তরকে অনুরোধ করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশনস) মো. রেজাউল করিম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিদেশে পালিয়ে থাকা আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোল সহযোগিতা করে থাকে। অন্যদিকে বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে সেটিও সংশ্লিষ্ট দেশ ইন্টারপোলকে জানায়। যাঁদের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির আবেদন করা হয়েছে, সেগুলো এখন ইন্টারপোলে প্রক্রিয়াধীন।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি, ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় একটি এবং বিগত সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে আরও একটি মামলা রয়েছে।