Image description
 

১২ দিনের মাথায় ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ থেমে গেলেও মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুন এখনও নিভেনি। কারণ থেমেছে যুদ্ধ, কিন্তু থামেনি ইরানের প্রস্তুতি। এবার সেই প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট। প্রশ্ন উঠছে—আড়ালে আবডালে কি তবে পারমাণবিক বোমা তৈরি করে ফেলেছে তেহরান?

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলার এক মাস পার হলেও এখনও স্পষ্ট নয়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কতটা ক্ষতি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করলেও, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ওয়াশিংটন ও তেল আবিব এখনও স্বস্তিতে নেই।

পেন্টাগনের রিপোর্ট বলছে, হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি হয়তো দুই বছরের জন্য পিছিয়ে গেছে, কিন্তু তা একেবারে ধ্বংস হয়নি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোপন গোয়েন্দা সংস্থার অনুমান, কয়েক মাসের মধ্যেই তেহরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানকে নতুন করে গোটা কর্মসূচি সাজাতে হলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে তাদের আর খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। উপরন্তু, সাম্প্রতিক হামলা ইরানকে এ কাজে আরও উৎসাহিত করছে। কারণ এখন তারা আরও বেশি করে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে—নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় পরমাণু অস্ত্রই হতে পারে একমাত্র প্রতিরক্ষা।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র ও প্রক্সিদের (যেমন হামাস ও হিজবুল্লাহ) ব্যবহার করে ইরান ‘ফরওয়ার্ড ডিফেন্স’ কৌশলে সফল ছিল। কিন্তু সরাসরি যুদ্ধে সেই কৌশলের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের আকাশ থেকে চালানো হামলা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাও নগ্ন করে দিয়েছে।

সব মিলিয়ে ইরান বুঝতে পারছে, শক্তিধর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে হলে দরকার ভয় ধরানো ক্ষমতা—যা কেবল পারমাণবিক অস্ত্র দিয়েই সম্ভব। অনেকটা উত্তর কোরিয়ার মতো, যারা পরমাণু অস্ত্র দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকেও চোখে চোখ রেখে হুঁশিয়ারি দেয়। এখন ইরানও সেই পথেই হাঁটছে।

ফলে অনেকেই মনে করছেন, ইরান হয়তো গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছে। এবং খুব শিগগিরই বিশ্বকে চমকে দিয়ে তারা ঘোষণা দিতেও পারে—‘আমরাও পারমাণবিক শক্তিধর দেশ!’