
তসলিমা নাসরিন এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বহু পেইজ ও প্রোফাইল থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কালো গেঞ্জি ও প্যান্ট পরিহিত এক তরুণকে পুলিশ ও এপিবিএন এর সদস্য আটক করে মারধর করছেন। ভিডিও আরেক অংশ দেখা যায়, একই রকম কালো গেঞ্জি ও প্যান্ট পরিহিত এক ব্যক্তির লাশ একটি ভ্যান গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন তার স্বজনরা।
এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পুলিশের হাতে আটক এবং ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া লাশটি একই ব্যক্তির যার নাম রমজান কাজী (১৮)। এবং আরও দাবি করা হচ্ছে যে, পুলিশ তাকে আটক অবস্থায় গুলি করে হত্যা করেছে।
কিন্তু একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর ও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, পুলিশের আটক করা ব্যক্তি এবং ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া লাশ এক ব্যক্তি নন।
বিবিসি, প্রথম আলো, যুগান্তরসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গোপালগঞ্জে নিহত ৪ জনের নাম নিশ্চিতভাবে জানা গেছে। তারা হলেন:
১. দীপ্ত সাহা
২. রমজান কাজী
৩. সোহেল রানা মোল্লা
৪. ইমন তালুকদার।
অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ৩ মিনিটের একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আটক যুবকটি তার নাম জানিয়েছেন 'জয়'।
এছাড়া এখন টিভির একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তির কান্নারত স্বজনরা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানাচ্ছেন লাশ হওয়া ব্যক্তিটির নাম রমজান কাজী। তারা তার বাবার নাম ও ঠিকানাও জানিয়েছেন।
তবে রমজান আলীর চেহারা স্পষ্টভাবে ক্যামেরায় ধরা পড়েনি। সে কারণে দুইজনের চেহারা তুলনা করা কিছুটা কঠিন।
তবে একাধিক ভিডিও দেখে উভয়ের চেহারার কিছু অমিল ধরা পড়েছে। যেমন-- জয়ের গোফ ও দাঁড়ি সমান মাপের। এবং রমজানের গোফ ছোট দাঁড়ি লম্বা। জয়ের চুলের সামনে অংশ পাশের অংশের চেয়ে অনেক লম্বা, অন্যদিকে রমজানের চুলের সামনের অংশ তুলনামূলক কম লম্বা।
এখন টিভি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের ক্যামেরায় ধরা পড়া এই ব্যক্তির পোশাকে মিল থাকলেও কিছু ভিন্নতাও পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন, রমজান আলী এবং জয়ের পরা প্যান্টের বেল্ট দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের (ছবিতে দেখুন)। এবং জয়ের গেঞ্জিটি হাফ-হাতা অন্যদিকে রমজানের গেঞ্জি ফুল-হাতা। (উভয়ের বেল্টের এবং গেঞ্জির হাতার তুলনামূলক চিত্রটি লক্ষ্য করুন)।
দ্য ডিসেন্ট ঘটনাস্থলে থাকা দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধির কাছ থেকে রমজানের লাশের কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ডিজিটাল ফুটেজ দেখে আমাদের বিশ্লেষণ সঠিক এবং স্পষ্টতই নিহত রজমান কাজীর চেহারা পুলিশের হাতে আটক থাকা জয়ের চেহারার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
দ্য ডিসেন্ট রিপোর্ট