Image description

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশে চলমান অস্থিরতার মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম নগরের এক সভায় বলেছেন, ‘অনেকেই জিয়াউর রহমানের ছবি পদদলিত করেছে। এটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। এখন আমাদের সহনশীল রাজনীতি করতে হবে।’

আজ রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে বিএনপির প্রয়াত কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় খসরু প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।

আমীর খসরু বলেন, ‘কারও বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করলেও সম্মান দেখাতে হবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের মনোজগতে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। সেটা ধারণ করতে না পারলে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না। আমরাও যদি ধারণ করতে না পারি; সামনে পথ চলা কঠিন হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের নেতা তারেক রহমানও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। আমাদের রাজনীতি হবে সব সময় সহনশীল। রাজনীতি শুধু ক্ষমতায় যাওয়া না। জনগণের সমস্যা বোঝা, সেটি সমাধানে নেতৃত্ব দেওয়া।’

আমীর খসরু আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখন সংস্কার করছে। কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার না হলে কোনো লাভ হবে না। কোনো কমিশন মানুষের মনের কথা বুঝবে না। রাজনৈতিক দল মানুষের মনের কথা বুঝবে। ঢাকা শহরে ১০ জন বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না। তাই দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানান তিনি।

আবদুল্লাহ আল নোমানের অবদান স্মরণ করে আমীর খসরু বলেন, নোমান ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে। পরে তিনি জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সুসময়ে-দুঃসময়ে কর্মীদের পাশে থেকেছেন। ভয়কে উপেক্ষা করে আন্দোলনের মাঠে ছিলেন। সর্বশেষ দুঃসাহসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। নোমান ভাইদের মতো কর্মীবান্ধব নেতা বর্তমানে কমে গেছে।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

চাঁদাবাজি নিয়ে নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সভায় বক্তারা বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটা শ্রেণি অপকর্ম করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীও বিএনপি পরিচয় দিচ্ছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। বিএনপির প্রতি ৮০ শতাংশ মানুষের জনসমর্থন রয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দলটি নিয়ে এখন ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াত ও এনসিপির নেতারা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবির মিছিল করে বিএনপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে। তাদের নেতাও তারেক রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছে। জামায়াত ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি। তারা বাংলাদেশের জন্ম চায়নি। শুরু থেকে বাংলাদেশের বিরোধিতা করা দলটি ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির বিরোধিতা করছে। জনসমর্থনহীন দলটির সংগঠিত কর্মী রয়েছে। যারা সবখানে বিচরণ করে। তারাই এখন পরিকল্পিতভাবে বিএনপির বিরোধিতা করছে।

এক উপদেষ্টার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ওই উপদেষ্টা মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করছেন। এ জন্য দ্রুত তাঁর পদত্যাগের দাবি জানান বক্তারা।