Image description
 

বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেছেন, অভ্যুত্থান চাইলেই হয় না। দীর্ঘদিনের শোষণ, নির্যাতন, লাঞ্ছনা ও বঞ্চনায় পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই ছিল জুলাই অভ্যুত্থান। গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ গুম—খুনসহ যেসব অপকর্ম করেছে সেজন্য তাদের প্রতি ঘৃণাই যথেষ্ট নয় বরং যথাযথ বিচার অপরিহার্য। জীবন—মৃত্যুর অদ্ভুত সমীকরণে উপনীত হয় গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তি ও তার পরিবার। গুমের শিকার পরিবার ঈদ, পূজা—পার্বণ, উৎসব পালন করতে পারে না, তাদের পরিবারের প্রতীক্ষার দিন শেষ হয় না। গুম পৃথিবীর জঘন্যতম অপরাধ।

 

আজ শনিবার এফডিসিতে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে নাগরিক সচেতনতা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি অয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

তিনি আরও বলেন, আইন—শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগকে যদি কেউ পুনর্বাসন করতে চায় তাহলে সেটি হবে অপরাধীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া। ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির ঐক্য অপরিহার্য। বর্তমানে এই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ঐক্যে কোনও বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। একটি বিশেষ দলকে টার্গেট করে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। শেখ হাসিনা যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা তা এখন সারাবিশ্বের মানুষের মুখে মুখে। শেখ হাসিনা ছিল একজন নিষ্ঠুর, নির্দয়, কুৎসিত, অমানবিক ও অত্যাচারী স্বৈরশাসক। শেখ হাসিনা ছিল সারাবিশ্বের ফ্যাসিস্টের মুখপাত্র। তিনি দেশটাকে বাপের তালুক মনে করতেন। নমরুদ—ফেরাউনের অত্যাচারকেও হার মানিয়েছিল শেখ হাসিনার জুলুম অত্যাচার। মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যাকে সত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার মাস্টার ছিল শেখ হাসিনা।

কিরণ আরো বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যে গুম—খুন, হত্যা, অত্যাচার—নির্যাতন, মামলা—হামলা চালিয়েছিল তা ক্ষমার অযোগ্য। বিডিআর, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড ছিল তার ক্ষমতায় টিকে থাকার অন্যতম হাতিয়ার। আওয়ামী লীগ যখনই বেকায়দায় পড়েছে তখনই জঙ্গি নাটক সাজিয়েছে। আন্দাজ, অনুমান ও কল্পিত কাহিনীর মাধ্যমে তথ্য—প্রমাণবিহীন বিচার করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ অন্যান্যদের শাস্তি দিয়েছিল। মুফতী হান্নানকে ডিজিএফআইয়ের বিশেষ সেলে আটক রেখে দ্বিতীয়বার স্বীকারোক্তি নিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল। ৪০০ বছরের ফৌজদারী মামলার ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশে এভাবে দ্বিতীয়বার স্বীকারোক্তি নেওয়ার এমন একটি নজিরও নেই। এ ধরনের নজির তৈরি করেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা। যা মিথ্যা প্রমাণীত হওয়ায় মামলা থেকে সবাই খালাস পেয়েছে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে নাগরিক সচেতনতার ভূমিকাই মুখ্য শীর্ষক ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সিকান্দার রেমান ও সাংবাদিক আরিফুজ্জামান মামুন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।