
রেজাউল করিম রনি একটা কথা প্রায়ই বলেন, বিএনপি ফেইল করলেও বাংলাদেশের স্বার্থে আমাদের নতুন একটা বিএনপি লাগবে। কথাটা বেশ অর্থবহ।
গতকাল মির্জা গালিবের একটা আলোচনা দেখলাম। এই ভদ্রলোকের কথাবার্তা আমার বেশ ভালো লাগে। এবং এক্স শিবির হওয়া সত্ত্বেও ঐ আলোচনায় উনিও বললেন, বিএনপি যদি সঠিক পথে না চলে, বিএনপি যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমি এই দুই বক্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত।
জামায়াত-শিবির কিংবা এনসিপির সক্রিয় সদস্য বা সমর্থকরা হয়তো বিএনপির পরাজয়ই চান, সেটা তাদের চাওয়ারই কথা। কিন্তু আমি যখন বিএনপির সমালোচনা করি, তখন আমি চাই, বিএনপি যেন আমার মতো শতশত মানুষের সমালোচনা দেখে নিজেদের অবস্থান শোধরানোর চেষ্টা করে।
বিএনপি যেন আওয়ামী লীগের মতো জনবিচ্ছিন্ন পড়ে, কিংবা তারা যেন আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি বরণ করে - এটা আমার চাওয়া না। কারণ গতকালের ঘটনার রিঅ্যাকশনে দুই সাপের এক বিষ বললেও আমি জেনুইনলি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির যথেষ্ট পার্থক্য আছে। এবং আওয়ামী লীগের মতো দানবকে ঠেকানোর জন্য এখনও বিএনপির প্রয়োজনীয়তা আছে।
এই কথা আমি আগেও একবার বলেছি, এখনও বলি - আমি চাই আগামী নির্বাচনে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ জামায়াত-এনসিপিকে ভোট দিক, যেন বিএনপি এককভাবে সুপার মেজরিটি না পায়। কিন্তু একইসাথে আমি এটাও চাই, যেন বিএনপি পরাজিত না হয়। অর্থাৎ বিএনপিই যেন ক্ষমতায় আসে, কিন্তু সেই আসা কষ্টার্জিত হয়। যেন কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে হয়। যেন তারা যা খুশি তা করতে না পারে।
হতে পারে জামায়াত-এনসিপি ক্ষমতায় আসলে বিএনপির চেয়ে কম দুর্নীতি করবে, সৎ লোকদেরকে ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতিতে সততাই একমাত্র যোগ্যতা না। আমি মনে করি না, ভারতের, লীগের এবং ডীপ স্টেটের ষড়যন্ত্রের মুখে টিকে থাকার মতো সামর্থ্য এখনও জামায়াতের বা এনসিপির হয়েছে। সেজন্যই বিএনপি ব্যর্থ হলে বাংলাদেশই ব্যর্থ হবে।
বিএনপির যে অল্প কয়জন বুঝদার অ্যাক্টিভিস্ট আমার লিস্টে আছেন, আপনাদের প্রতি রিকোয়েস্ট - ভাই, দেশের সংস্কার বড় বড় নেতারা দেখুক, কিন্তু আপনারা দলের অভ্যন্তরে সংস্কারের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। চাঁদাবাজি-দখলদারিত্ব থেকে দল থেকে বের করার জন্য চেষ্টা করেন।
মানুষকে দুই সাপের এক বিষ মনে করার স্কোপ দিয়েন না। সেরকম হলে আপনারা ক্ষমতায় হয়তো আসবেন, কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারবেন না। ১০ বছর পর যদি আপনাদেরকেও আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হয়, তাহলে আপনাদেরও ক্ষতি, দেশেরও ক্ষতি।
মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা