Image description

 বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, এখন আওয়ামী লীগ চোখে দেখা যায় না। দৃশ্যমান কোনো শত্রুও নেই। তবে অদৃশ্য শত্রু আছে। তাই মনে রাখবেন, বিএনপি এখনও ক্ষমতায় আসেনি। কোনরকম অন্যায়ের সঙ্গে, কোনো রকম বাণিজ্যের সঙ্গে নিজেকে জড়াবেন না।’

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রুমিন ফারহানা।


তিনি বলেন, ‘যারা জনপ্রিয় হয়, যারা বিএনপির মতো দল হয়, সেই দলকে ভাঙা যায় না। কিন্তু তার পিছনে শত্রু থাকে। সুতরাং আমি আমার ভাই-বোনদের বলবো সাবধান।’

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘গত ১৫ বছর বড় দুঃসময় কেটেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। ওই সময়ে একটি এমপি নির্বাচন তো দূরে থাক, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও আমরা ভোট দিতে পারিনি। গত ১৫ বছর কোনো ঘটনাই ঘটেনি, কিন্তু মামলার আসামি হয়ে গেছে ৩০০ থেকে ৫০০ জন। আমার ভাই রাতে ঘুমাতে পারেননি। আমার ভাইয়েরা ওই বিলের মধ্যে, আইলের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন; আবার সকালের মধ্যে নাই হয়ে গেছেন। আমার ভাইয়েরা মোবাইল ফোন অন রাখতে পারেন নাই। পুলিশ প্রশাসন এ মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তদের ধরেছে।’

ফারহানা আরও বলেন, আমি বলেছিলাম, ‘২০২৪ এর নির্বাচন করো হাসিনা, করতে পারো, কিন্তু এক বছরের বেশি সংসদে টিকবা না। আল্লাহর দরবারে কোটি-কোটি শুকরিয়া, সাত মাসের বেশি টিকতে পারেন নাই। ওই গণভবন যেটা এক টাকা দিয়ে কিনে নিতে চাইছিলা, মনে করছিলা গণভবন তোমার বাপের বাড়ির পৈত্রিক সম্পত্তি। সেই গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে কইরা ওই যে উড়াল দিছে আর আসতে পারে নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, আমরা যদি একত্রে থাকি, আমরা যদি সঠিক মানুষকে রাজনীতিতে নির্বাচিত করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে আর দ্বিতীয় হাসিনা আমরা তৈরি হতে দেব না।’

রুমিন বলেন, ‘আপনারা জানেন অনেক সংস্কারের কথা হচ্ছে, সংস্কার ভালো জিনিস। সংস্কার দেশের এবং মানুষের কল্যাণের জন্যই করা হয়। তবু এইটুকুও মনে করিয়ে দেই, প্রথম সংস্কারের কথা বলেছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গত ২০১৬ সালে তিনি ভীষণ ২০৩০ বলে একটি দলিল প্রকাশ করেন। সুতরাং আজকে যে সংস্কারের কথা হচ্ছে, আমরা বিএনপি নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে না। তবে একই সঙ্গে দেশবাসীকে মনে করিয়ে দিতে চাই, এই সংস্কারের জনক কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তারপরে বিএনপির যিনি কাণ্ডারি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি কিন্তু সংস্কারের ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন।’

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘সংস্কার অবশ্যই হবে, তবে সেটা গণমানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা। আপনারা যাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন, একমাত্র তাদেরই অধিকার আছে, আগামীর বাংলাদেশ কি হবে, কীভাবে আপনাদের উন্নয়ন করা যাবে; কীভাবে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা যাবে; কীভাবে মানুষের কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করা যাবে; সব কিছুই তারা নির্ধারণ করবেন। যারা কিনা শুধুমাত্র আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, মানুষ কিন্তু ভোলে না। আজকে মানুষকে এক হাত পানির নিচে ফেলবেন, কালকে মানুষ আপনাকে ১০০ হাত পানির নিচে নিয়ে যাবে।’

অরুয়াইল ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন: জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এবি মমিনুল হক, সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ আনোয়ার হোসেন মাস্টার, সরাইল উপজেলা বিএনপিসহ স্থানীয় দলীয় নেতৃবৃন্দ।

এর আগে জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজাপুর, দুবাজাইল এবং কাকুরিয়াসহ প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মিছিলসহ জনসভাস্থলে এসে জড়ো বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে সভাস্থল ক্রমশ জনসভায় পরিণত হয়।