Image description

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ পাওয়ার একটাই পথ, আর তা হলো ইসলাম।

রোববার (০৬ জুলাই) সকাল ১০টা দিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নিজ নির্বাচনী এলাকা পটুয়াখালীর বাউফলে এক শিক্ষা বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপজেলার ৮ নম্বর মদনপুরা ইউনিয়নের উদ্যোগে কেন্দ্র ও বুথভিত্তিক দায়িত্বশীলদের নিয়ে মধ্যমদনপুরা মসজিদ মাঠে এ শিক্ষা বৈঠক ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ তার বক্তব্যের শুরুতে জুলাই আন্দোলনে শহীদের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের সর্বাঙ্গিন কল্যাণ কামনা করেন। নিজ নির্বাচনী এলাকার নিজ ইউনিয়নের নেতাকর্মীসহ উপস্থিত সবার সামনে ছোটবেলার স্মৃতিচারণ ও তার মরহুম বাবার কথা স্মরণ করে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।

এসময় রাজনৈতিক কারণে নিজ ইউনিয়ন মদনপুরা ও মদনপুরার মানুষের জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয় না তার কারণ উল্লেখ করে উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আপনাদেরকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয় না। এজন্য আপনাদের মন খারাপের কোনো বিষয় নাই। আমি আপনাদের সন্তান। আপনাকেই দায়িত্ব নিতে হবে— শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বন্ধুবান্ধব থেকে চাকরিজীবী সবাইকে। বাউফলের অন্যান্য এলাকার সবাইকে বলবেন, মাসুদ আমাদের সন্তান, কেবল মদনপুরার জন্য নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্য আমরা মাসুদকে ছেড়ে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে মদনপুরাকে গোটা বাউফল, বাউফলকে গোটা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশকে গোটা বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাব।

আমি আপনাদের চোখের পানির ঋণ ইনশাআল্লাহ পরিশোধ করব উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মদনপুরাতে কোনো প্রোগামে এলে খবর দিতো যে, পুলিশ আসছে আপনারা পালিয়ে যান। আল্লাহ সেই পরিবেশ থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছেন। এখন সেই পরিবেশ আর নাই। আজকের এই সুন্দর পরিবেশ সেই জুলাই-আগস্টের শহীদ ও আহতদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

জামায়াত নেতা মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাউকে এমপি বানানোর জন্য রাজনীতি করে না। আমরা রাজনীতি করি, আমরা আহ্বান জানাই। মানুষের তৈরি মতবাদ ৫৩ বছর আমরা দেখেছি, আমাদের পরিবর্তন হয় নাই। আপনারা এ বছর একটাবার আমাদের সুযোগ দেন, আমরা ইসলামকে সংসদে পাঠাতে চাই।

ড. মাসুদ বলেন, শেখ হাাসিনা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে গোটা বিশ্বকে জানিয়ে গেছে জুলাই আন্দোলনের মূল শক্তি ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির। কারণ সে জানাত, তার সব গোয়েন্দা সংস্থা তাকে তথ্য দিয়েছে এই আন্দোলনের সামনে-পেছনে, ডানে-বামে কারা, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। এখনো বিভিন্ন ফুটেজ টেলিভিশনে পাবেন। অথচ এখনো কোনো কোনো মহল চোখ থাকতে অন্ধ হয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা খুঁজে তারা পায় না।

নিজ নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে জামায়াত নেতা ড. মাসুদ বলেন, আমি বাউফলে কোনো রাজনীতি করি না। গোটা বাউফলবাসীই আমার রাজনীতি। আমি গোটা বাউফলবাসীকে ভালোবাসি। আমাদের এই সুন্দর বাউফলটাকে সাজানোর জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। পরিবারতন্ত্র বাংলাদেশ কিংবা এই বাউফলের মানুষ আর বাছাই করবে না। বিগত ১৭ বছরে বাউফলের মানুষের থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন থাকি নাই। তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য কাজ করছি। ইসলামের ভিত্তিতে আমরা সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত, ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত বাউফল বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি।

আমরা বলেছি, কোনো মানুষকে এই বাউফলের এমপি বানাব না। এমপি হবে এই বাউফলের মানুষের একজন খাদেম। একজন সেবক। এবার সততা, নৈতিকতা, দক্ষতা নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম এমন একজন খাদেম হবে বাউফলের এমপি। একজন সেবক হবেন বাউফলের সাড়ে ৪ লাখ মানুষের এমপি। আমি আপনাদের পাশে থাকব।

তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ফসল রক্ষার জন্য আগাছা দমন করতে হয়। এবার আমরা ফসল পাওয়ার জন্য আগাছা দমন করেই সাড়ে ৪ লাখ মানুষের দ্বারে ফসল পৌঁছে দেব ইনশাআল্লাহ।

মাওলানা মো. নুরুল্লাহর সভাপতিত্বে এসময় জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা মো. ইসহাক মিয়া, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মু. রফিকুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপজেলা সভাপতি মো. লিমন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।