Image description

দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলের নাম করে চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী। এর মধ্যে ‘হাইব্রিড’ ও ‘নব্য বিএনপির’ নামধারীরাই বেশি বেপরোয়া। 

বিগত দিনে রাজপথে থাকা বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে যুগান্তরকে বলেন, বিএনপিতে এখন ‘হাইব্রিড’দের অনেক দাপট। দলের দুর্দিনে যারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন, তাল মিলিয়ে চলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে, তারাই এখন বিএনপির হর্তাকর্তা। তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে নব্য বিএনপি নামধারী অনেকে। যারা কখনোই বিএনপিতে সম্পৃক্ত ছিলেন না। অথচ তারাই এখন দখল ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন। এমনকি বিভিন্ন কমিটিতেও তাদের অনেককে রাখা হচ্ছে। এ নিয়ে ত্যাগী এবং দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা বিব্রত এবং অনেক স্থানে কোণঠাসা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মশাল মিছিল, ভাঙচুর, নিজ দলের কর্মীদের আহত করার ঘটনা ঘটে। পরে তদন্ত করে চিলমারী উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদ হোসেন পাখি ও সদস্য আবদুল মতিন শিরিনের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার কোতোয়ালি মডেল থানার পাছথুবী ইউনিয়নের (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক খোকন মিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি দলের নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের পাটগ্রামে কিছু লোক বিএনপির নামে সেখানকার থানায় ঢুকে ভাঙচুর করে। এ সময় দুজনকে ছিনিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পাটগ্রাম পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হোসেনকে প্রাথমিক পদসহ সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঢাকার বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক মুনির হোসেনের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি গত বুধবার রাতে বনানী এলাকার জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে ভাঙচুর ও নারীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মুনির হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়।

গত ২৮ জুন বাড়ি দখল ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাবেক কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ হারুনকে কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দপ্তর সম্পাদক (যুগ্ম আহ্বায়ক মর্যাদা) সাইদুর রহমান মিন্টু যুগান্তরকে বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই হারুনুর রশিদ হারুন শোকজের জবাব দিয়েছেন। তবে আহ্বায়ক দেশের বাইরে থাকায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। শিগগিরই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী বা অপরাধমূলক কাজের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান জিরো টলারেন্স। দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিংবা অসদাচরণ করলেই সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের নামে যে কেউ যে কোনো ধরনের অনৈতিক, অবৈধ, সন্ত্রাসী ও সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড করবে, সে রেহাই পাবে না। এরই মধ্যে চার-পাঁচ হাজার বিএনপি এবং দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।