Image description
 

ধর্ষণ মামলার বাদী ইডেন মহিলা কলেজের সেই ছাত্রীকে কারাগারেই বিয়ে করেছেন বিতর্কিত ও আলোচিত সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে, কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয় এই বিয়ে। উপস্থিত ছিলেন বর নোবেল ও পাত্রী ইসরাত জাহান প্রিয়া।

নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন ও মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই ইলা মণি নিশ্চিত করেছেন, বাদী ও আসামি উভয়ের সম্মতিতে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়।

 

তবে এ ঘটনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী পারশা মাহজাবীন পূর্ণি। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নোবেলের কারাগারে বিয়ের সংবাদসংবলিত একটি ফটোকার্ড শেয়ার করে লিখেছেন—

 

‘ধর্ষণের শিকার নারীকে তার ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে করতে বাধ্য করা কখনোই ন্যায়বিচার হতে পারে না! এটা আসলে প্রাতিষ্ঠানিক নিষ্ঠুরতার এক নগ্ন উদাহরণ। এমন রায় কোনো আদালতের রায় হতে পারে না- এটা নৈতিকতা ও আইনের সম্পূর্ণ ভগ্নদশার প্রতিচ্ছবি।’

তিনি আরও লেখেন—

‘একজন বেঁচে থাকা নারীর সুস্থতা বা পুনরুদ্ধার কখনোই তার নির্যাতকের সঙ্গে তথাকথিত “পারস্পরিক সম্মতি”র মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া উচিত নয়। এ ধরনের রায় প্রমাণ করে, আমাদের বিচারব্যবস্থা কতটা পিতৃতান্ত্রিক ও দুর্নীতিগ্রস্ত। এখানে শাস্তির বদলে রক্ষাকবচ খোঁজা হয়, আর ট্রমাকে ঐতিহ্যের মোড়কে ঢেকে ফেলা হয়।’

পারশা বলেন—

‘এ ধরণের রায় শুধু একজন নারীকে ব্যর্থ করে না, এটি সব ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকারদের উদ্দেশে এক ভয়ঙ্কর বার্তা দেয়- তাদের যন্ত্রণা নাকি দর কষাকষির বস্তু!’

সবশেষে তিনি উল্লেখ করেন—

‘ন্যায়বিচার তখনই সত্যিকার হয়, যখন তা মর্যাদার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে- সহিংসতার সঙ্গে আপস করে নয়।’

গত ২০ মে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে পাঠানো হয় গায়ক নোবেলকে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে সাত মাস ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেছেন।

এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার গত বুধবার বাদীকে বিবাহ করার আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, পরদিন বৃহস্পতিবার কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।