Image description

কুমিল্লার মুরাদনগরে ইয়াবাসহ পাঁচ যুবককে গ্রেফতারের পর পুলিশ হেফাজতে শেখ জুয়েল (৪৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বাঙ্গরা থানায় পুলিশের নির্যাতনে এ মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। মৃত্যুর খবরের পর প্রতিবাদ জানিয়ে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

নিহত জুয়েল উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে। তিনি এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি বিএনপির সক্রিয় কর্মী বলে জানিয়েছেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। তার ভাই বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

 

গ্রেফতার অন্যরা হলেন, বাঙ্গরা উত্তর পাড়ার কনু মিয়ার ছেলে মো. হেলাল (৪২), হেলালের স্ত্রী শারমিন (৩৫), আজগর আলীর ছেলে খোকন (৪৫) ও দৌলতবাড়ির ইউনুস মিয়ার ছেলে মো. হান্নান (২১)।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বাঙ্গরা এলাকা থেকে পাঁচজনকে মাদক সেবনের সময় গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৭০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের থানায় আনার পর শেখ জুয়েল হঠাৎ অসুস্থতাবোধ করলে দ্রুত তাকে রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

নিহত শেখ জুয়েলের স্ত্রী শিল্পী বেগম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর জানতে পারি পুলিশ জুয়েলেকে ধরে নিয়ে গেছে। পরে থানায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। ওই সময় সে সুস্থ ছিল। সে আমাকে বলে, আমি কিছু করিনি, আমাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করো। এরপর খবর পাই মারা গেছে। একজন সুস্থ মানুষ এভাবে মারা যেতে পারে না। তাকে নির্যাতন করে মারা হয়েছে।

মাদকসহ আটক বিএনপি কর্মীর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু

এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মুরাদনগর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ছোটো ভাই কাজী শাহ আরফিন বলেন, পুলিশের হেফাজতে বিএনপির একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। যার বিরুদ্ধে কোনো মামলাই ছিল না। একটি স্বাধীন দেশের থানায় বিনা অপরাধে এভাবে একজন নাগরিকের মৃত্যু শুধু অমানবিকই নয়, এটি রাষ্ট্রীয় অপব্যবহার ও দমননীতির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। ন্যায়বিচারের নামে যদি মানুষ হত্যা হয় তাহলে সেটি বিচার নয়, বর্বরতা।

 

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ইয়াবা উদ্ধার অভিযানে জুয়েলসহ ৫ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগটি সঠিক নয়।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, শেখ জুয়েল একজন চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। আটকের পর জুয়েলকে পুলিশ নির্যাতন করেনি। অন্য কোনো কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।