
বগুড়া জেলা, শহর ও সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে—আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলে যাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল, এমন অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাঁদের পরিবারে বিএনপি বা এর কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্যও নেই।
এই অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত একাধিক নেতা-কর্মী, যারা দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন এবং বিগত সরকারের সময়ে মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
গত ৪ জুন কমিটি ঘোষণার পরদিনই পদবঞ্চিত নেতারা শহীদ খোকন পার্কে আমরণ অনশন শুরু করেন। পরে জেলা বিএনপির নেতারা তাঁদের অনশন ভাঙিয়ে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যান। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ—ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত ও সদ্য দলভুক্তদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
পদবঞ্চিতদের অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—যাঁদের বিরুদ্ধে অতীতে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে।
একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে যুগ্ম সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে, যা দলীয় নীতিমালার পরিপন্থী বলেও অভিযোগ করেছেন বঞ্চিতরা।
অভিযোগকারীদের অন্যতম নাছিরুজ্জামান মামুন বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করেছি, মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। অথচ কমিটিতে আমাদের একেবারেই উপেক্ষা করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, তাঁদের মধ্যে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, কেউ গ্রেপ্তার হয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তবুও তাঁদের নাম কমিটিতে স্থান পায়নি।
বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এম আর হাসান পলাশ সাংবাদিকদের জানান, “কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় কমিটি ছোট করার কারণে অনেকের নাম বাদ পড়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা যেত। কিন্তু গণমাধ্যমে অভিযোগ তুলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।”
এই ঘটনাটি ছাত্র রাজনীতিতে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা ও নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে বিতর্কিত নিয়োগ দলীয় ঐক্য ও আদর্শকে কতটা প্রভাবিত করবে—তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা।