
বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও সংঘর্ষের আশঙ্কায় আজ শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আগামী রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরিত পৃথক আদেশে বলা হয়, গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ও বকুলবাড়িয়া এলাকায় সংঘর্ষ ও উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গলাচিপা পৌর এলাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এবং দশমিনা উপজেলার সদর ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নেও একই পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস বাজারে গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় বিএনপির কার্যালয়ও। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুরের ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম নুর।
সংঘর্ষের সময় ভিপি নুর বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া এলাকায় সাংগঠনিক সফরে ছিলেন। সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই রাতেই বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা বিভিন্ন সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ৩টার দিকে নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্য দিয়ে ভিপি নুর গলাচিপা শহরে পৌঁছান।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেন নুরুল হক নুর। একই কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিও। এরপরই প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
জানতে চাইলে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব মো. শাহ আলম সিকদার বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর উসকানিমূলক আচরণ করেছে। পরে রাস্তায় গাছ ফেলে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। প্রশাসন কেন ১৪৪ ধারা জারি করল, তা আমাদের স্পষ্ট নয়।’

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব স্নেহাংশ সরকার কুট্টি বলেন, ‘ভিপি নুর বিএনপির বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার করে আসছেন। তাঁর বক্তব্যে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তিনি একদিকে বিএনপির নমিনেশন চান, আবার দলকে নিয়ে অপপ্রচার চালান—এটা দ্বিচারিতা।’
এ বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। জনগণের জানমাল রক্ষায় ১৪৪ ধারা পুরোপুরি কার্যকর রাখা হয়েছে। ঘরোয়া পরিবেশেও সভা-সমাবেশ কিংবা সংবাদ সম্মেলন করা যাবে না।