Image description

কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় বাজারের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুপক্ষের মারামারির ঘটনাকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে জড়িয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। 
গত সোমবার (৯ জুন) উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পান্তি বাজারের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংগঠিত দু পক্ষের মারামারিকে আসিফ মাহমুদের গাড়িবহরে যানজটের কারণে তার অনুসারীরা মারধর করেছে বলে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ সংবাদের প্রতিবাদ জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  গত সোমবার (৯ জুন) সকালে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজ এলাকায় ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শনে আসেন।

এরই অংশ হিসেবে সকাল ১০টার দিকে পান্তি বাজারে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসেন। বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, উপদেষ্টা আসার আগেই বাজারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুটো পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে পাহারপুর সরকার বাড়ির কয়েকজনকে দৌঁড়ে ঈশ্বরের মিষ্টি দোকানে নিয়ে মারধর করে ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। দুপক্ষই স্থানীয় বিএনপি কর্মী বলে জানা যায়।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর উপদেষ্টা পান্তি বাজারে প্রবেশ করে এবং উপস্থিত সবার সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে চলে যান।  

একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বিকেল ৩টার দিকে আলামিন, কাইউম, রাকিবের নেতৃত্বে পাহাড়পুর সরকার বাড়ির লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে সকালে মারধরকারী ও মোবাইল ছিনতাইকারীদের খুঁজতে বাজারে যায়। মারধরের সাথে জড়িত ও মোবাইল নিয়ে যাওয়া বাজারের লাইনম্যান মহিউদ্দিনকে সামনে পেয়ে মারধর করে। মহিউদ্দিন পাহাড়পুর ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

মহিউদ্দিনের মারধরের ঘটনাকে ৪ দিন পর উপদেষ্টার গাড়িবহরে যানজটের কারণে মারধর করা হয় মর্মে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। 

এসব সংবাদ মিথ্যাচার বলে অভিযোগ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট ওবায়দুল ইসলাম। তিনি বলেন, অন্য ঘটনাকে উপদেষ্টাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। একটি মহল সর্বদা উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

চার দিন আগের পারিবারিক ঘটনাকে উপদেষ্টাকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের নিন্দা জানাচ্ছি।  

স্থানীয় ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বলেন, বাজারে দুপক্ষের মারামারিতে উপদেষ্টার কোনো সম্পর্ক নেই। ঘটনা উপদেষ্টা আসার আগেই। 

ঈশ্বর মিষ্টান্ন ভান্ডারের দোকানী ঈশ্বর দাস বলেন, একজনকে দৌড়ে আমার দোকানে ঢুকিয়ে কয়েকজন মারধর করে, মোবাইল নিয়ে যায়। 

এ বিষয়ে পাহারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামাদ মাঝি জানান, উপদেষ্টার গাড়িবহর বা যানজট সংক্রান্ত কোন বিষয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। উপদেষ্টা আসার আগেই অন্য বিষয়ে এলাকার দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এছাড়া কিছু নয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুর রহমান বলেন,  উপদেষ্টার আগমনের আগে পান্তি বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় শুনেছি। তবে উপদেষ্টার গাড়িবহর আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। হামলা হয়েছে এমন মর্মে কোন অভিযোগ আসেনি।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, উপদেষ্টা আসার চার দিন পর পত্রিকায় দেখলাম মারধরের ঘটনা।  বে এ নিয়ে কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।

উল্লেখ্য, কথিত লাইনম্যান মহিউদ্দিন আগেও চুরি ও ডাকাতির অভিযোগে মারধরের শিকার হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হন।