Image description

ছাত্রশিবিরকে সরাসরি ইঙ্গিত করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, তাদের পূর্বপুরুষেরা ‘রগ কেটে কেটে’ রাজনীতিতে স্ট্যাবলিশড হয়েছে। কিন্তু তারা এখন সেটি পারে না। কারণ সেটি করলে তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করা হবে।

গতকাল রবিবার (৮ জুন থেকে) তার ২৯ সেকেন্ডের এই বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ঈদুল আযহা উপলক্ষে নিজ দলের কর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া একটি আনুষ্ঠানে তাকে এই বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। তবে কবে এবং কোথায় এই বক্তব্য দিয়েছেন তিনি, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, আজ সোমবার (৯ জুন) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্য করে তিনি (ছাত্রদল সভাপতির) একের পর এক অযাচিত, ভিত্তিহীন এবং উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যের শব্দচয়ন ও উপস্থাপনার ভঙ্গিমায় বিগত ফ্যাসিস্টদের ঔদ্ধত্য ও দমননীতির প্রতিধ্বনি প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এই দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসংলগ্ন ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

 

 

২৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে ছাত্রদল সভাপতি রাকিব বলেন, ছাত্রশিবির নামে একটি গুপ্ত সংগঠন আছে। এটি একটি ‘রগ কাটা’ সংগঠন। তাদের পূর্বপুরুষেরা ‘রগ কেটে কেটে’ রাজনীতিতে স্ট্যাবলিশড হয়েছে। ১৯৭১ সালে তারা ‘রগ’ কেটেছে, ১৯৯০ সালেও ‘রগ’ কেটেছে এবং ২০০১ সালেও কেটেছে। কিন্তু এখন আর পারে না।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন ছাত্রশিবির যদি এই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয় তাহলে তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করা হবে। 

ছাত্রদল সভাপতির বক্তব্য ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক
ছাত্রশিবিরকে নিয়ে রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য প্রদানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গতকাল ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের একটি বক্তব্যের ভিডিও গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। উক্ত বক্তব্যে তিনি ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্য করে একের পর এক অযাচিত, ভিত্তিহীন এবং উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যের শব্দচয়ন ও উপস্থাপনার ভঙ্গিমায় বিগত ফ্যাসিস্টদের ঔদ্ধত্য ও দমননীতির প্রতিধ্বনি প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এই দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসংলগ্ন ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজের ন্যায্য অধিকার আদায়, শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস পরিবেশ তৈরি ও জাতীয় সংকট নিরসনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে ছাত্র-জনতার আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ধারাবাহিক গঠনমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থী, সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, শহীদ পরিবার এবং আহত ও গাজী ভাইদের সাথে নিয়ে দেশব্যাপী ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে। যা ছাত্রসমাজের নিকট ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে, অতীতের ধারাবাহিকতায় কালচারাল ফ্যাসিস্টদের ফাঁদে পা দিয়ে ছাত্রদল আবারও ছাত্রশিবিরকে ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। পতিত ফ্যাসিস্ট যেমন তাদের ব্যর্থতা ও অপকর্ম ঢাকতে ছাত্রশিবির ও অন্যান্য বিরোধী সংগঠনের ওপর দায় চাপাত ও পরচর্চায় লিপ্ত হতো, ছাত্রদলও একই পদাঙ্ক অনুসরণ করছে।

তারা ছাত্রদল সভাপতির প্রদত্ত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং ছাত্রস্বার্থবিরোধী প্রতিহিংসামূলক অপরাজনীতি পরিহার করে গঠনমূলক ও সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানান। অন্যথায়, ছাত্রদলকেও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের মতো জনবিচ্ছিন্নতা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার পরিণতি ভোগ করতে হবে।