Image description

লক্ষ্মীপুরে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলনের (৬০) মৃত্যুর ঘটনা রাজনৈতিকভাবে টেনে না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তারা জানান, মাদক ও একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাটি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি বা জড়িতদের আইনগতভাবে বিচার হতে পারে।

আজ সোমবার (৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি নেতারা এ আহ্বান জানান। প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবু।

 

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘আমরা জামায়াতকে অনুরোধ জানিয়েছি ঘটনাটি যেন রাজনৈতিকভাবে না নেওয়া হয়। নিহত কাউছারের ভাই আরজু ছিলেন যুবলীগের কর্মী।

 
আরজু মাদক ও তার ছেলে চুরির ঘটনায় জড়িত ছিলেন। সামাজিক এ অবক্ষয়ের কারণে এলাকাভিত্তিক মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন জড়িত। এটি সম্পূর্ণ এলাকার ঘটনা, রাজনৈতিক কোনো ঘটনা নয়।
 
জামায়াতের নেতারা আমাদের কথা দিয়েছেন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। অথবা ১-২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করবেন। কিন্তু তারা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তারা কথা দিয়ে কথা রাখেননি।’
 

প্রাথমিক সুরতহাল অনুযায়ী মৃত্যুটি স্বাভাবিক ছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে সত্য ঘটনা জানা যাবে।

 
স্বাভাবিক মৃত্যুকে একটি অস্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষে নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ এলাকাকে নষ্ট করার সুযোগ আমরা হতে দিতে চাই না। এটার দায়-দায়িত্ব উনাদেরকে (জামায়াত) বহন করতে হবে। যেহেতু উনারা কথা দিয়ে কথা রাখেননি। উনারা যেহেতু প্রকৃত ঘটনা থেকে সরে আসছে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য। এলোপাতাড়ি আমাদের নেতাকর্মীদের মামলায় দিয়ে এলাকায় এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, এটি যেকোনো সময় একটি খারাপ পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। ঘটনাটির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসা পর্যন্ত ও তদন্তের পর সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি অথবা আইনগতভাবে বিচার হতে পারে।’
 

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ঘটনাটি কোনোভাবেই রাজনৈতিক ঘটনার দিকে নেবেন না। কারণ রাজনৈতিক ঘটনার দিকে নিতে গেলে সমাজের মধ্যে হানাহানি বেড়ে যাবে। একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান লিটন, জেলা ওলামা দলের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ এমরান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মহসিন কবির স্বপন, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন প্রমুখ।

 

জামায়াতের ওলামা বিভাগের নেতা কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী শিল্পি আক্তার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন। এতে এজাহারভুক্তরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কাউছার গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে হামলার শিকার হন। পরে সেদিন সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।