
টিউলিপের ঘনিষ্ঠ একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, গত ৪ জুন চিঠি পাঠানোর পর ইউনূসের দিক থেকে এখানো কোনো সাড়া পাননি এই ব্রিটিশ এমপি।
সাদা পতাকা তুললেন টিউলিপ, সাক্ষাৎ চান ইউনূসের
বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করার আশায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরে তার সাক্ষাৎ চেয়েছেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।
আর সেজন্য ইউনূসকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলের চা পানের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।
এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “আমি আশা করি এই বৈঠকের মাধ্যমে ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের সেই ভুল বোঝাবুঝি দূর করা সম্ভব হবে—যার মাধ্যমে আমার খালা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।”
টিউলিপ লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনে লেবার পার্টির এমপি। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
তার খালা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই মানবতাবিরোধী অপরাধে তার বিচারের উদ্যোগ এগিয়ে নিচ্ছে ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি কয়েকটি দুর্নীতি মামলাও দায়ের করা হয়েছে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে, যেখানে টিউলিপের নামও এসেছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
‘ঘুষ’ হিসেবে একটি আবাসন কোম্পানির কাছ থেকে গুলশানে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টিউলিপকে তলবও করেছিল বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন।
তদন্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করার কথাও দুদক বলেছে।
তবে টিউলিপ দাবি করে আসছেন, তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ ‘মিথ্যা’ । আর তার আইনজীবী এসব অভিযোগকে বলছেন ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন’।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস দ্বিপক্ষীয় সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা হবেন সোমবার। দুদক চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরও এই সফরে তার সঙ্গী হচ্ছেন। শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ এগিয়ে নিতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যাচ্ছেন তারা।
যোগাযোগ করা হলে টিউলিপের ঘনিষ্ঠ একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের লন্ডন প্রতিনিধি সৈয়দ নাহাস পাশাকে বলেছেন, গত ৪ জুন চিঠি পাঠানোর পর ইউনূসের দিক থেকে এখানো কোনো সাড়া পাননি এই ব্রিটিশ এমপি।
ওই ব্যক্তি বলেন, “দুদক কেন পেছনে লেগেছে টিউলিপ তা বুঝতে পারছেন না। তারা লন্ডনে যোগাযোগ না করে ঢাকায় সুধা সদনের ঠিকানায় চিঠি পাঠাচ্ছে।
“টিউলিপ এখন মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সবকিছু তাকে বুঝিয়ে বলতে চান। সমস্ত কাগজপত্র তার কাছে আছে, সেগুলো তিনি দেখাতে চান।”