Image description


হামলার ওই ঘটনার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দায়ী করে আসছেন কাউছারের পরিবার ও জামায়াত নেতারা।
লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা নিহতের ঘটনায় বিএনপিকর্মীদের নামে মামলা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

লক্ষ্মীপুরে ‘পূর্ব শত্রুতার জের ধরে’ হামলায় এক জামায়াত নেতার মৃত্যুর পর বিএনপি নেতাকর্মীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।


এ ঘটনায় সোমবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির জেলা কমিটি।

নিহত কাউছার আহম্মদ মিলন (৬০) শহরের রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে এবং বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন তিনি।


বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সামনে হামলার মধ্যে ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে মাথায় রডের আঘাতে আহত হন কাউছার। পরে জেলা সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার রোববার সন্ধ্যায় সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখানে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২০ জনকে আসামি করা হয় বলে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ জানান।

 

মামলার আসামিরা হলেন– মো. রিয়াজ, মো. রনি, মো. কামাল, মো. সোহাগ, মো. জহির, রকি, মো. বাবুল, সোহেগ হেবেছা, বাবুল, মো. সাহেদ, মো. সুমন, স্বপন আহমেদ। তারা আদিলপুর ও রাজিবপুর এলাকার বাসিন্দা এবং বিএনপির সমর্থক।


হামলার ওই ঘটনার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দায়ী করে আসছেন কাউছারের পরিবার ও জামায়াত নেতারা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু ও যুগ্ম-আহ্বায়ক হাসিবুর রহমানসহ দলটির কয়েকজন নেতা শুক্রবার বিকালে কাউছারের জানাজায় গেলে জামায়াতের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন।

পরে রাতে বিএনপি ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। বিএনপির দাবি, হামলার ঘটনাটি ঘটেছে ‘পুরনো শত্রুতার জেরে’, এটা রাজনৈতিক কোনো বিষয় নয়।


কাউছারকে হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার দুপুর ১২টায় শহরে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে জামায়াত। দলের জেলা কমিটির সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী এ কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে এ ঘটনা নিয়ে সোমবার সকাল ১০টায় শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে বিএনপি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বলে জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান জানিয়েছেন।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আসামিদের সঙ্গে কাউছারদের পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজিবপুর এলাকায় তাদের বাড়ির সামনে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কাউসারের ভাই আফতাব হোসেন আরজুর ওপর হামলা করে আসামিরা। এসময় তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করা হয়।

ঘটনা দেখে কাউছার তার ভাইকে বাঁচাতে যান। তখন তার মাথার পেছনে লোহার রড দিয়ে কয়েকটি আঘাত করা হয়। এরপর মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়।

পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের সামনে তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

সেখানে বলা হয়, হুমকিতে ভয় পেয়ে দুই ভাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে আসেন। পরে সন্ধ্যায় কাউছারের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, “আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।”