Image description

ছাত্রলীগের মতো ছাত্রশিবিরও হুমকি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি বলেছেন, অতীতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যে ভাষায় হুমকি দিতেন সে ভাষায় এখন সাদিক কায়েম এবং ছাত্রশিবিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি হুমকি দিচ্ছেন। 

ছাত্রদল সেক্রেটারি অভিযোগ করেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় নতুন যে রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে, তারা এবং শিবির নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিতে আমরা দেখেছি। তাদের বিচার, তদন্তের বিষয়ে তারা এখনো পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোনো আন্দোলন, কোনো প্রোগ্রাম, কোনো কিছুই তারা করেনি।

কিন্তু তার বিপরীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নামে কোনো মিথ্যা প্রোপাগান্ডার সংবাদ যদি পরিবেশিত হয়, সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে বিভ্রান্ত করতে তারা মহাব্যস্ত হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাগে ছাত্রলীগ ছাত্রশিবির যে বক্তব্য দিয়েছে এটি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং খুবই দুঃখজনক। মানে অবস্থা এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে, যারা অতীতে ছাত্রলীগের বড় বড় পদ পদবীতে ছিলেন তারা এখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নামে প্রোপাগান্ডা করছেন, হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। অর্থাৎ ছাত্রশিবিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি যিনি ছাত্রলীগের পদ পদবীতে ছিলেন এবং এর আগে আমরা দেখেছি সাদিক কায়েম তিনি নিজেও ছাত্রলীগের একাধিক পদে ছিলেন।

‘তারা এখন ছাত্রশিবির হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিপক্ষে তারা হুমকি দিচ্ছেন এবং আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছেন। অতীতে যেরকম ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হুমকি এবং ভয় দেখাতেন। কারণ, তাদের হুমকি এবং ছাত্রশিবিরের হুমকি একই। কারণ, তারা অতীতে যেহেতু ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন, সুতরাং দুটি তো একই হবে।

এটি খুবই স্বাভাবিক। এতে আমরা খুব বেশি অবাক হইনি। অতীতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যে ভাষায় হুমকি দিতেন, সে ভাষায় এখন সাদিক কায়েম এবং ছাত্রশিবিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি হুমকি দিচ্ছেন।এটি এজন্যই দিচ্ছেন কারণ, অতীতে তারা এত বেশি ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন, এত বেশি ছাত্রলীগ থেকে শিখে এসেছেন; এজন্য খুব আলাদা করে এটিকে নতুনত্ব দিতে হয়নি।’

নাছির বলেন, ‘কমার্স কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, আমরা তদন্ত করে দেখেছি সেখানে ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দরা ছাত্রদলকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

বাধাগ্রস্ত থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরে সেখানে অন্য কোনো ঘটনা আসলে ঘটেনি এবং সেখানে একটি কমিটমেন্ট ছিল যে, ক্যাম্পাসের ভিতরে কোনো ছাত্র সংগঠন কোনো বুথ করবে না বরং ক্যাম্পাসের বাহিরে করবে।’

‘কিন্তু মধ্যরাতে ছাত্রশিবির এই কমিটমেন্ট ব্রেক করে তারা একটি বুথ স্থাপন করেছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তারা প্রোপাগান্ডা করছে যে, ছাত্রদল তাদের উপর হামলা করেছে। এরকম কোনো ঘটনা আসলে সেখানে ঘটেনি। সেখানে ছাত্রলীগের দুইজন কর্মীর সঙ্গে রাবেয়া তাহসিন মুনের সামান্য একটা কথা কাটাকাটি হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাবেয়া তাহসিন মুনের ব্যক্তিগত নাম্বারটি এবং তার ছবিকে এডিট করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাকে সামাজিকভাবে ব্যাপকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।’ 

‘এর পরিপ্রেক্ষিতে রাবেয়া তাহসিন মুন মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে পরবর্তী সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, দু-একটি গণমাধ্যম অত্যন্ত যাচাই-বাছাই ব্যতীত এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেছে। এরকম ঘটনা আমরা দেখেছি। যে মিথ্যা সংবাদটি পরিবেশিত হয়েছে, সেটি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি পর্যন্ত শেয়ার দিয়েছেন। গণমাধ্যমের শেয়ার দিয়ে তিনি প্রোপাগান্ডা করে একটি মব তৈরি করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই রাবেয়া তাহসিন মুনের মানসিক অবস্থার পুরো দায়-দায়িত্ব শিবির এবং নতুন যে রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে নাগরিক পার্টি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে নিতে হবে। কিন্তু যেটি গণমাধ্যমে উঠে আসার কথা ছিল সেটি হচ্ছে, রাবেয়া তাহসিন মুন একদম জুলাই আগস্টের ফ্রন্টলাইনের একজন যোদ্ধা ছিলেন। এ কারণে ছাত্রলীগের দুইজন পদধারী কর্মীর সঙ্গে তার কথাবার্তা হয়েছে, কথা কাটাকাটি হয়েছে। সেটি না হয়ে, পরিবেশিত হয়েছে দুইজন নারী শিক্ষার্থীকে জোর করে মিছিলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন ছাত্রলীগের রাবেয়া তাহসিন মুন। আমরা এই মিথ্যা প্রোপাগান্ডার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’