
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নির্বিচারে ১৪শ'র বেশি মানুষ হত্যার দায় শেখ হাসিনার। তার বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যার নির্দেশনা,প্ররোচনা, উস্কানিসহ ৫ অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও মিলেছে একই অপরাধের প্রমাণ। তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন চলাকালে সরকারি স্থাপনায় হামলা ও আগুন লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা- তদন্তে এমন প্রমাণও মিলেছে। এ মাসেই আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর প্রত্যাশা প্রসিকিউশনের।
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দেশে ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে জুলাইন আন্দোলন দমাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি মাঠে নামানো হয় সশস্ত্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। নির্বিচারে গুলি চলে আন্দোলনকারীদের উপর।
জুলাই হত্যাযজ্ঞের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সোমবার (১২ মে) প্রসিকিউশনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
বলা হয়, আন্দোলন দমাতে তখন হত্যা করা হয় ১৪০০ এরও বেশি মানুষ। আহত ২৫ হাজার। আর সেই হত্যাযজ্ঞের প্ররোচণা, উস্কানি আর নির্দেশ দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হুকুম বাস্তবায়নের নির্দেশের অভিযোগ শেখ হাসিনার দুই সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে।
তদন্তে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের তথ্য প্রমাণে আছে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়া, নিহতদের পোস্টমর্টেম করতে না দেয়া, আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা। এমনকি নিজেই হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসা না দেয়ার নির্দেশনা।
সরকারি স্থাপনায় আগুন লাগিয়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দায় চাপানোর নির্দেশনার তথ্য উপাত্তও উঠে এসেছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর জানান, শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৫ অভিযোগের সাপেক্ষে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত ও প্রমাণ হাতে এসেছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনের সময় সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালানো হয়েছিল শেখ হাসিনার নির্দেশেই। যার দায় চাপিয়ে দেয়া হয় আন্দোলনকারীদের উপর।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, রাজপথের চাপে বিচারে তড়িঘড়ি করা যাবে না। আন্তর্জাতিক মানের বিচার নিশ্চিত করতে যতটুকু সময় প্রয়োজন ততটা দেয়া উচিত।
এ মাসেই ফরমাল চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর প্রত্যাশা প্রসিকিউশনের। এ নিয়ে জুলাই গণহত্যার দুই মামলার তদন্ত শেষ হলো।