
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কর্মচারী ইয়াসিন শিকদারকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুতের অনুসারীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে হুমকি দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সোমবার (১২ মে) রাত ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউমার্কেট সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি সংঘটিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, স্বাধীনতা দিবস হলের কর্মচারী রাজীব এর আগে একাধিকবার দাবি করেছেন, তার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছবি রয়েছে। এই দাবি তুলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘হেডম’ নিয়ে অশোভন আচরণ করেন এবং বলেন, তার ‘অনেক ক্ষমতা’ আছে—এ কারণে তিনি কোনো ছাত্রদল কর্মীকে পাত্তা দেন না বলেও মন্তব্য করেন।
এমন মন্তব্য ও আচরণ নিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কর্মচারী ইয়াসিন শিকদার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বিদ্যুৎকে ধমক দিয়ে চুপ থাকতে বলেন। এ ঘটনার পর রাজীব ও ইয়াসিন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
তবে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসার পর ইয়াসিন শিকদারের ওপর হামলা চালায় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুতের অনুসারীরা বলে অভিযোগ উঠেছে। তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কর্মচারী ইয়াসিন শিকদার বলেন, ‘নিউমার্কেটে আমার এক কলিগের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে সেটি মিটমাট হয়ে যায়। আমি শুনে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখতে যাই। কিন্তু আমার সাথে দুই একটা কথা কাটাকাটি না হতেই বিদ্যুতের ১৫-২০ জন অনুসারীরা আমার ওপর হামলা করে এবং আমার কান ফাটিয়ে দেয়। এর আগে আমার সঙ্গে কারো কোনো ঝামেলা ছিল না।’
অপরদিকে, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বিদ্যুৎ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সে বিভিন্ন সময় 'হেডম' নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। সে দাবি করে গোপালগঞ্জে কেউ তাকে কিছু বলার সাহস নেই। আজও সে হেডম দেখিয়ে খারাপ আচরণ করায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে।’
ছাত্রদলের সভাপতি দুর্জয় শুভ বলেন, ‘যতকিছুই ঘটুক, ইয়াসিন শিকদারের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের ভালো সম্পর্ক। ঝামেলা মূলত তার সাথে নয়, ঝামেলা ছিল তার এক কলিগ—কর্মচারী রাজিবের সাথে। রাজিব স্বাধীনতা দিবস হলের একজন কর্মচারী। তার কাছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে তোলা একটি ছবি ছিল যা তিনি গোবিপ্রবির ছাত্রদলের সভাপতিকে দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘এসব জায়গায় যেতে হলে আমার সাথে যোগাযোগ করিস’। এটা ছিল পূর্বের ঘটনা।
আজ নিউমার্কেটে অন্য একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল তার কলিগ রাজিবের সাথে। রাজিব পরে মীমাংসা করে চলে যায়। এরপর তাকে আসার জন্য কল দেয়। তবে তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে আসে এবং সেখানে বড় বড় হেডম দেখাতে থাকে। কিছুক্ষণ পর দু'একটি কথা কাটাকাটির পর ইয়াসিন শিকদার বিদ্যুৎকে বলেন, 'তুই চেপে যা'। এরপরই মূলত ঘটনাটি ঘটে।’