
আজ সোমবার দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রধান শিরোনাম: 'হাসিনার ভুলেই সব শেষ'।
বিস্তারিত খবরে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসার যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, শেখ হাসিনা নিজেই সেটি শেষ করে দিয়েছেন। তার চরম দাম্ভিকতা এবং প্রতিবিপ্লব ঘটানোর 'দুঃস্বপ্ন' পুরো দলকে বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
যার ফলে ছাত্র-জনতার দাবির মুখে শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। এখন দলের নিবন্ধন বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে খবরে আরও বলা হয়েছে, পাঁচই অগাস্ট জীবন নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলেও দেশে রেখে যাওয়া দল এবং দলের নেতাকর্মীদের বাঁচাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
জুলাই-অগাস্টের গণহত্যাসহ ক্ষমতায় থাকার সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসন ও লুটপাটের জন্য জাতির কাছে ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চাননি। উল্টো ভারতে বসে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করার জন্য অব্যাহতভাবে দলের নেতাকর্মীদের উসকানি দিয়েছেন।
এখন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর ফলে 'আওয়ামী লীগ' নামে দলটির নেতাকর্মীরা বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবেন না।
শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে দলটির বিচার হবে। এ বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে।

দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে, 'ভোটেও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ'।
খবরের বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সব পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দেওয়ার কোনো সুযোগ পাবে না দলটি।
এছাড়া নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দলটির নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকিও রয়েছে। দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের সরকারি প্রজ্ঞাপন হাতে পাওয়ার পর নির্বাচন বিষয়টি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে ইসি সভা করবে।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে খবরে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত একটি রাজনৈতিক দলের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া মানে সেই দল নির্বাচন কমিশন থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবে না।
ভোটার তালিকা পাবে না, নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নও দিতে পারবে না। ব্যালট পেপারেও ওই দলটির জন্য প্রতীক বরাদ্দ হবে না। নিবন্ধন আপাতত বহাল থাকলেও নিবন্ধিত দলের তালিকায় ওই দলটির ক্ষেত্রে 'যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত' কথাটি লেখা থাকবে।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বহাল থাকবে কি না, সে বিষয়ে দ্রুত কমিশন সভায় বসতে যাচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারি গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে।
একই বিষয়ে পত্রিকাটির প্রথমপাতার আরেকটি খবরের শিরোনাম: 'এসপি-ওসিদের কাছে নির্দেশনা যাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়বে নজরদারি'।
খবরটিতে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার।
দলটি যাতে কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য তৎপরতা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ইতোমধ্যে দেশের সকল রেঞ্জের আওতাধীন থানার ওসি ও জেলার এসপিদের কাছে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, মেট্রোপলিটন এলাকার ওসি ও ডিসিদেরও একইভাবে জানানো হয়েছে যাতে আওয়ামী লীগ কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে। পাশাপাশি র্যাব, ডিবি ও পুলিশের অন্যান্য অপারেশনাল ইউনিটগুলো তৎপরতা শুরু করেছে।
পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মিছিল, মিটিং, সভা, সেমিনার, অনলাইন প্রচারণাসহ যেকোনো ধরনের কার্যক্রমে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্য দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে পুলিশ।

'বিচারের প্রক্রিয়া শুরু'- দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি।
খবরটিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের বিচার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে (আইসিটি)। এ ক্ষমতা দিয়ে অর্ন্তবর্তী সরকার রোববার এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইসিটি আইনে সংশোধনী এনেছে।
এ সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্ত হওয়া নতুন বিধানের আওতায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা, নিবন্ধন বাতিল ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার মতো শাস্তি দেওয়া হতে পারে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন যে, কমিশন চাইলে এখন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল করতে পারে। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, দলের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল হলে জাতীয় ও স্থানীয় কোনো নির্বাচনে দলীয় পরিচয় ও প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের প্রথমপাতার একটি খবরের শিরোনাম : 'Parties welcome ban on AL activities'.
অর্থাৎ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধকে দলগুলো স্বাগত জানিয়েছে।
খবরের বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত অর্ন্তবর্তী সরকার নিয়েছে, সেটাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বাংলাদেশে সক্রিয় অন্য রাজনৈতিক দলগুলো। তারা স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের দ্রুত বিচার করার আহ্বান জানিয়েছে।

আরেকটি ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান শিরোনাম : 'Food, fertilisers, raw materials: NBR plans advance tax on 200 duty-free imports'.
অর্থাৎ খাদ্য, সার, কাঁচামাল: ২০০ ডিউটি ফ্রি আমদানি পণ্যে অগ্রিম করারোপের পরিকল্পনা করছে এনবিআর।
খবরে বলা হয়েছে, রাজস্বখাতে আয় বাড়ানোর জন্য ডিউটি ফ্রি ২০০ পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে দুই শতাংশ অগ্রিম করারোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে খাদ্যপণ্য ও সারের দাম এবং পোশাকখাতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম: 'প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো জরুরি'।
খবরটির বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কারে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে গঠিত নাগরিক প্ল্যাটফর্ম 'নাগরিক কোয়ালিশন' বা নাগরিক জোট।
সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং কোনো ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সুযোগ না রাখার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রোববার ঢাকার সেগুনবাগিচায় এক অনুষ্ঠানে 'সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব' তুলে ধরা হয়।
খবরে আরও বলা হয়েছে যে, 'এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন' এটি জনপ্রিয় দাবি বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। কিন্তু এমন বিধান করা হলেও দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে বলে মত দেন তিনি। সেজন্য দুই মেয়াদের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন আইন উপদেষ্টা।

'ব্যাংকের মালিকানা হস্তান্তরের ক্ষমতা পেল সরকার'- দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম এটি।
বিস্তারিত খবরে বলা হচ্ছে, 'ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫' নামে নতুন একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যেখানে কোনো দুর্বল ব্যাংককে সাময়িক সময়ের জন্য সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংকের মালিকানায় নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া সরকারি মালিকানার কোনো কোম্পানিতে কোনো ব্যাংকের শেয়ার হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ দিতে পারবে।
খবরে আরও বলা হয়েছে যে, নতুন এই অধ্যাদেশ জারির ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতা বেড়েছে। তারা এখন দুর্বল ব্যাংকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণ, তৃতীয়পক্ষের কাছে বিক্রি বা নতুন শেয়ার ইস্যুসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে পারবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের লাইসেন্স বাতিল করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সে ব্যাংকের অবসায়নের জন্য আদালতে আবেদন করবে।
আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোনীত কাউকে অবসায়ক নিয়োগ দেবে। অবসায়ন আদেশ কার্যকর হওয়ার পর কোনো ব্যাংকের দায়ের ওপর সুদ বা অন্য কোনো মাশুল কার্যকর হবে না।

দৈনিক বণিক বার্তা পত্রিকার প্রথমপাতার একটি খবর হলো: 'নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে'।
খবরটিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ চারের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়ে গেছে। পুলিশের অপরাধ পরিসংখ্যানের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের শেষ চার মাসে যেখানে পাঁচ হাজার ৭৯৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার তের-তে।
খবরে আরও বলা হয়েছে যে, পুলিশের অপরাধ পরিসংখ্যানে উঠে আসা তথ্যের তুলনায় বাস্তব পরিস্থিতি আরো খারাপ। প্রতিনিয়ত এমন অনেক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে যেগুলো সামনে আসছে না। রাজনৈতিক অস্থিরতার দেশে আইনের শাসন না থাকার কারণে এসব ঘটনা বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।