
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় হাসিনা পালানোর ঠিক দুদিন আগে দেশ ছেড়ে চোরের মত লেজ গুটিয়ে পালান ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে তার নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে তাপস ৩ আগস্ট সিঙ্গাপুরে পালিয়ে অবস্থান নেন। এবং সেখানেই ভিসা ছাড়া দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। তবে, সম্প্রতি তাপসের সিঙ্গাপুরে পালিয়ে থাকার বিষয়টি মিডিয়ার সামনে আনেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার আরেক দোসর ভাতের হোটেলের মালিকখ্যাত ডিবি হারুন। এরপরই সিঙ্গাপুর ছেড়ে নতুন গন্তব্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন মাফিয়া তাপস।
এদিকে তার দুই ছেলের একজন লন্ডনে আর আরেকজন যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করছেন। নির্ভরযোগ্যসূত্রের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক এই মেয়র। তিনি লন্ডনে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন, তার পরিবারসহ এমটিই বলছে সূত্র। ২৪ এর ৩ আগষ্ট দেশ ছেড়ে পালানোর সময়ও প্রথমে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন তাপস। তবে ব্যর্থ হবার পর শেষ পর্যন্ত সপরিবারে সিঙ্গাপুর চলে যান।
তাপসের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন, অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগসহ বেশ কিছু অভিযোগে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। ফ্যাসিস্ট হাসিনার এই দোসরের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেনো শেষ নেই, পিলখানা হত্যাকান্ডে সরসরি জড়িতে ছিলেন তাপস, সম্প্রতি এমন অভিযোগই করেছেন পিলখানা হত্যাযজ্ঞে নিহত মেজর শাকিলের ছেলে রাকিন আহমেদ। এছাড়া সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ ২৪ এর ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে দলীয় নেতাকর্মীদের সরাসরি নির্দেশ দেওয়াসহ তদারকি করেছেন তাপস। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি তিনি।
২০২১ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাঈদ খোকন দাবি করেছিলেন এই সিটির মেয়র থাকার যোগ্যতা নেই তাপসের। এসময় তিনি বলেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ করেছেন।’ এছাড়া একজন প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছিলেন বলে ২০২৩ সালে মন্তব্য করেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি’র মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সেসময় তার এই বক্তব্য ঘিরে তোলপাড় শুরু হয় দেশজুড়ে, শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি।
২৪ এর গণহত্যায় সরাসরি জড়িত থাকা মাফিয়া তাপস যেখানেই থাকুক তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি দেশের প্রতিটি আমজনতার।