Image description
ডয়চে ভেলেকে আরাফাত, আ. লীগকে নিষিদ্ধ করে এমন শক্তি বাংলাদেশে নাই

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে এমন কোনো শক্তি বাংলাদেশে নাই। আর ড. ইউনূসের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে না।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এক অডিও সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা  মোহাম্মদ এ আরাফাত।

আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন প্রসঙ্গে আরাফাত বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের যে কথা উঠেছে সেটার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোনো সম্পর্ক নাই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এখনো বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতে। এবং আওয়ামী লীগের টপ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ৯৯.৯৯ %, শতভাগ মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। কাজেই এখানে নেতৃত্ব নিয়ে পুনর্গঠনের কোনো সুযোগ আছে, এটা আমি মনে করি না। কোনো সুযোগ নাই। সোজা কথা। কিন্তু দলীয়ভাবে দলকে পুনর্গঠন, সুসংগঠিত করা, সেটা তো অন্য জিনিস। 

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন কোনো শক্তি নাই যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে। এই দেশের জন্ম দিয়েছ আওয়ামী লীগ। এদেশের তৃণমূলের কোণায় কোণায় আওয়ামী লীগের অবস্থান। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো শক্তি নাই বাংলাদেশে। বাংলাদেশে রাজাকার, পাকিস্তানি এবং পাকিস্তানি প্রেতাত্মারাই নিষিদ্ধ হবে। আওয়ামী লীগ হবে না। যে দেশ জন্ম দেয়, তাকে নিষিদ্ধ করা যায় না। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কিনা এমন প্রশ্নে আরাফাত বলেন, ইউনূসের অধীনে নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ তো করবো না। ইউনূস এবং তার যে গ্যাং, এরা তো আওয়ামী লীগের সাথে যে আচরণ করছে... নির্বাচন তো ওভাবে হবে না। আমরা কথা হলো, এরা বলে আসলে গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে...যে আমরা নাকি ভালো নির্বাচন করি না, আমরা নাকি লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড দেই না। আমরা নাকি প্রশাসনকে দলীয়করণ করি, এগুলো বলে আসলে আমাদের অ্যাগেইন্সটে। খুব ভালো কথা। তো এখন তাহলে তারা প্রশাসনকে দলীয়করণ করছে কেন?

তিনি বলেন, এক চিঠিতে এতগুলো তাদের লোকজন নিচ্ছে। এবং তারা এখন কেন একটা লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড ক্রিয়েট করতে পারছে না? 

আরাফাত প্রশ্ন করে বলেন, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন কি সম্ভব ইউনূসের অধীনে? প্রত্যেকটা কী পজিশনে বসিয়ে রেখেছে বিএনপি-জামায়াতি লোকজন। তারা ৩২ নাম্বার ভাঙলো, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের ঘরবাড়ি ভাঙলো, ভাঙার পরে যখন প্রতিরোধ গড়ে উঠলো তখন তারা আবার ডেভিল হান্ট করলো। ডেভিল হচ্ছে যারা ভাঙছে, তাদেরকে প্রটেকশন তারা দিচ্ছে... আর ডেভিল হান্টের নামে যারা ভিকটিম, তাদেরকে তারা হান্ট করছে। এরকম একটা সরকারের অধীনে, কখনও...অন্তর্ভুক্তিমুলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নিরবাচন সম্ভব নয়।  ৫ই আগস্টের পরে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, এগুলোর জন্য ওরা ক্ষমা চাইবে? তোফাজ্জলের হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে মাসুদের হত্যাকাণ্ড থেকে রাজীবের হত্যাকাণ্ড...এগুলোর জন্য ক্ষমা চাইবে ওরা? 

তিনি বলেন, আমি এর আগেও বলেছি বারবার, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যে ঘটনাই ঘটেছে, এর একটা দায় আমাদের আছে। কারণ আমরা তো সরকারে ছিলাম। সে দায় আমরা স্বীকার করেছি। এবং সে দায় স্বীকার করে আমরা কী করেছি? এটাকে বিচারের প্রক্রিয়ায় আনার চেষ্টা করেছি আমরা কমিশন গঠন করেছি। তখন জাতিসংঘকেও ডেকেছিলাম। 

আরাফাত বলেন, জুলাই-আগস্টের যে হত্যাকাণ্ড, মানে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত যে হত্যাকাণ্ড সেটারও তো বিচার এরা করছে না। এরা তো এটাকে পলিটিক্যালি অপব্যবহার করছে। যদি বিচার করতো, তাহলে কেন আজকে গণহারে মামলা হচ্ছে? এবং মামলা করে চাঁদাবাজি হচ্ছে? ওই ৭.৬২ কেন খুঁজে বের করছে না কার হাতে ছিল! আসল হত্যাকারীকে কেন খুঁজছে না? কারণ এরা তো বিচার করছে না। এরা তো হচ্ছে, এটাকে ব্যবহার করে, আওয়ামী লীগকে দমন-পীড়ন করা যায় কিভাবে...।

তিনি বলেন, রাজাকারদের ডিফেন্ডারদেরকে আইসিটিতে বসিয়ে দিয়েছে প্রধান প্রসিকিউটর (হিসাবে)...এদের অবজেকটিভ (উদ্দেশ্য) হলো আওয়ামী লীগকে শেষ করার চেষ্টা করা, যেটা সম্ভব না। এটাই অবজেকটিভ, বিচার ওদের অবজেকটিভ না..এরা  বিচার করছে না, বিচার আওয়ামী লীগই করতো।