
আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক— এমন দাবি তুলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছেন স্থানীয় সরকারের সাবেক জনপ্রতিনিধিরা। তারা বিএনপি সমর্থিত। তাদের দাবি, বর্তমান সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে তা অবাধ সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। তাই তাদের দাবি, আগে জাতীয় নির্বাচন তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুরু হওয়া সমাবেশে যোগ দেন জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত সাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার সাবেক মেয়র, কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও কাউন্সিলর এবং মনোনীত প্রার্থীরা।
পরে দাবির স্মারকলিপি নিয়ে প্রেস ক্লাব থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অভিমুখ পদযাত্রা শুরু করেন সাবেক জনপ্রতিনিধিরা। পরে পদযাত্রাটি হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারা মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
পুরো পদযাত্রাটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গেলে বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে তাই পুলিশের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করতে যান। শেষে কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেন স্থানীয় সরকারের সাবেক জনপ্রতিনিধিরা।
কর্মসূচি আসা সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সাবেক এক কাউন্সিলর বলেন, আমরা আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাই, তারপর স্থানীয় সংসদ নির্বাচন চাই। অতীতে যত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছে তারা আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়েছে। আমরা তৃণমূলের মানুষ, আমরা মাঠের খবর জানি। এ দাবি আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করেছি।
ঝিনাইদহের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন তারা চান না। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা যারা বলছেন, তাদের ভিন্ন মতলব আছে। জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে আগে একটি গোষ্ঠী স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়, যা ষড়যন্ত্র হিসেবে তারা দেখছেন।
ময়মনসিংহ জেলার একজন সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে দেশে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ অনেক বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা হলে তা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে পারে। এ সুযোগে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার সুযোগ পাবে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা হারাবে, দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচনও সরকারের পক্ষে করা সম্ভব হবে না। তাই আগে এবং দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেনি। জনগণ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সরকারকে জনগণের প্রত্যাশা উপলব্ধি করে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পাঁয়তারা করলে রাজপথে আন্দোলনে নামবো।