
মিনার রশীদ
‘ভাইল’ মারা শব্দটি গ্রামীণ জীবনের খুব জীবন্ত ও চিত্রধর্মী একটি শব্দ। এটিকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করার মতো কোনো সুশীল বাংলা শব্দ আসলে নেই। এর মর্মার্থ হচ্ছে—চাতুর্যের আশ্রয়ে কাউকে তার অজান্তে বা তার সম্মতি ছাড়া এমন কিছু করিয়ে ফেলা, যা সে আসলে করতে চাইছিল না।
অনেক শিশু থাকে, যারা ওষুধ খেতে চায় না। তখন মায়েরা কৌশলে চকোলেট বা মিষ্টির ভেতর লুকিয়ে ওষুধ খাইয়ে দেয়। একেই বলে শিশুকে ‘ভাইল’ মেরে ওষুধ খাওয়ানো। শিশু যদি মাছ-ডিম খেতে না চায়, তাকে বলা হলো এটা আসলে মুরগির মাংস বা আলুর চপ—ভাবে ভাইল মেরে খাইয়ে দেওয়া।
শিশুকালে এ রকম অনেক ‘ভাইল’ খাওয়ার পর সেই ছেলে বা মেয়ে বড় হয়ে বাবাকে বলে—‘আজ বন্ধুর জন্মদিন, তার জন্য একটা উপহার কিনতে হবে ‘ কিন্তু আসলে সেই টাকা খরচ হলো নিজের ঘুরতে যাওয়ার জন্য। এটিও একধরনের ভাইল মারা।
অনেক সময় কেউ বলে—‘চল একটু হাঁটতে যাই।’ কিন্তু পরে দেখা গেল আসল উদ্দেশ্য ছিল বাজার থেকে কিছু জিনিস বয়ে আনা। এটিও হলো ভাইল মারা।
রাজনীতিতে এর প্রয়োগ
এখন এই শব্দটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করলে বোঝানো যায়—কাউকে তার ইচ্ছা, দর্শন বা অবস্থানের বাইরে গিয়ে এমন কিছু করিয়ে নেওয়া, যা সে করতে চায়নি। যেমন—বিএনপিকে জামায়াত বানানোর চেষ্টা করা মানে হচ্ছে বিএনপির অজান্তে বা সম্মতি ছাড়া তাকে অন্য আদর্শে টেনে নেওয়া।
ইদানীং বিএনপির মধ্যে এ রকম কিছু কমরেডের জন্ম হয়েছে। এদের ১৬ বছরে আমাদের কোনো লেখায় বা টকশোতে লাইক দিতে দেখা যায়নি। এদের কাউকে আমাদের ফ্যাসিবাদী লেখায় সামান্য মন্তব্য করতে দেখা যায়নি!
এরা এখন বিএনপির সতর্ক প্রহরীর দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের মূল দায়িত্ব কেউ যাতে ‘ভাইল মেরে’ বিএনপিকে জামায়াত বানিয়ে না ফেলে! বিএনপিকে এ কাজে সহযোগিতার জন্য স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এগিয়ে এসেছে কবি, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী, টকশো টকার যাদের একটা কমন পরিচিতি ছিল বাম ও রামপন্থি! এরা এখন বিএনপির কাকতাড়ুয়ার দায়িত্ব পেয়েছে।
ঐতিহাসিক কিছু ‘ভাইল মারা’
কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন শ্যামা সংগীত লিখতেন, সেটি নিয়ে তদানীন্তন পণ্ডিত সমাজে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু সেই নজরুল যখন নিজের শেকড়ের দিকে ফিরে তাকালেন এবং ইসলামি সংগীত লেখা শুরু করলেন, তখন পশ্চিম বাংলার তথাকথিত দাদাবাবুরা হকচকিয়ে গেলেন। তারা বলাবলি শুরু করলেন, “গ্রামোফোন কোম্পানিগুলো ‘ভাইল’ মেরে নজরুলকে দিয়ে ইসলামি গান লিখিয়ে নিচ্ছে।”
গ্রামোফোন কোম্পানির সেই ‘ভাইল’ খেয়ে কবি একে একে লিখতে লাগলেন, তাওহিদেরই মুর্শিদ আমার... / আল্লাহর পরে পূর্ণ ঈমান কোথা সে মুসলমান…/ খোদার প্রেমের শরাব পিয়ে... / আমি যদি আরব হতাম মদিনারই ফুল... / রোজ হাসরে আল্লাহ আমার... / মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই…
শেষ গানটি ছিল বিশেষ তাৎপর্যময়। বহু বছর পর জিয়াউর রহমান নামের এক ভদ্রলোক—নজরুলকে সত্যিই মসজিদের পাশেই কবর দিলেন। এমন একজন স্মার্ট, আধুনিক মননের মানুষকে কে ‘ভাইল’ মেরে এ কাজটি করিয়েছিল, তাও এক বিরাট রহস্য!
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। সেই ভদ্রলোক আরো ‘ভাইল’ খেয়েছিলেন। আমাদের ‘পবিত্র ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান’-এ হঠাৎ করেই ঢুকে গেল ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’। ঢুকে গেল—‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ রাখার ঘোষণা। আজকের লাল পতাকার কমরেডরা যদি সেদিন থাকতেন, তবে কস্মিনকালেও এ কাজ হতে দিতেন না।
আমরা নিজের সম্প্রদায়ের ওপর কোনো অবিচার হতে দেখলেও চুপ মেরে যাই। কারণ প্রতিবাদ করলে সাম্প্রদায়িক বলে গণ্য হব। যদিও যিনি আমার সম্প্রদায়ের ওপর এই রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক নিপীড়নটি চালাচ্ছেন তিনি কিন্তু সাম্প্রদায়িক বলে গণ্য হবেন না। দেখুন, আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে কবি কাজী নজরুল ইসলামের উপলব্ধিতে কী ধরা পড়েছিল, যা তিনি লিখে গেছেন তার ‘বড়র পীরিতি বালির বাঁধ’ গ্রন্থটিতে আমাদের হুঁশটি ফেরানোর জন্য!
“কবির (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) চরণে ভক্তের সশ্রদ্ধ নিবেদন, কবি তো নিজেও টুপি-পায়জামা পরেন অথচ আমরা পরলেই তার এত আক্রোশের কারণ হয়ে উঠি কেন, বুঝতে পারিনি।
এই আরবি-ফার্সি শব্দ প্রয়োগ কবিতায় শুধু আমিই করিনি। আমার বহু আগে ভারতচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ প্রভৃতি করে গেছেন।
আমি একটা জিনিস কিছুদিন থেকে লক্ষ করে আসছি। সম্ভ্রান্ত হিন্দু বংশের অনেকেই পায়জামা-শেরওয়ানি-টুপি ব্যবহার করেন, এমনকি লুঙ্গিও বাদ যায়নি। তাতে তাদের কেউ বিদ্রুপ করে না, তাদের ড্রেসের নাম হয়ে যায় তখন ওরিয়েন্টাল। কিন্তু ওইগুলোই মুসলমানরা পরলে তারা হয়ে যায় ‘মিঞা সাহেব’। মৌলানা সাহেব আর নারদ মুনির দাড়ির প্রতিযোগিতা হলে কে যে হারবেন বলা মুশকিলÑতবু ও নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপের আর অন্ত নেই।
আমি তো টুপি-পায়জামা-শেরওয়ানি-দাড়িকে বর্জন করে চলেছি শুধু ওই ‘মিঞা সাহেব’ বিদ্রুপের ভয়েÑতবু নিস্তার নেই।”
মনে হচ্ছে এই লেখাগুলো ১৯২৭ সালের নয়, এসব যেন ২০২৫ সালে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে পর্যুদস্ত কোনো মুসলিম তরুণ তার মনের কষ্টগুলো বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছেন। পার্থক্য শুধু সেদিন ডাকা হতো ‘মিঞা সাহেব’ বলে আজকের ভার্সন হয়েছে ‘মৌলবাদী’!
যতটুকু জানা যায়, কবি নজরুল ইসলাম তার এক কবিতায় রক্তের জায়গায় ‘খুন’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন! এতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মারাত্মক গোস্বা করে বসেন। তার জবাবেই নজরুল লিখেছিলেনÑ
“আমি শুধু ‘খুন’ নয়Ñবাংলায় চলতি আরো অনেক আরবি-ফার্সি শব্দ ব্যবহার করেছি আমার লেখায়। আমার দিক থেকে ওর একটা জবাবদিহি আছে। আমি মনে করি, বিশ্ব-কাব্যলক্ষ্মীরও একটা মুসলমানি ঢং আছে। ও-সাজে তার শ্রীর হানি হয়েছে বলেও আমার জানা নেই। স্বার্গীয় অজিত চক্রবর্তীও এ-ঢঙের ভূয়সী প্রশংসা ক’রে গেছেন। বাঙলা কাব্য-লক্ষ্মীকে দুটো ইরানি ‘জেওর’ পরালে তার জাত যায় না, বরং তাকে আরো ‘খুবসুরত’ই দেখায়।”
বিশ্ব কাব্যলক্ষ্মীর যেমন একটি মুসলমানি ঢং রয়েছে, তেমনি বিশ্ব রাজনীতিলক্ষ্মীরও একটি মুসলমানি ঢং রয়েছে। রাজনীতির মুসলমানি ঢংটি ইসলামি ঢং থেকে একটু আলাদা। এই ঢংটি উপমহাদেশে প্রথম শুরু করেছিল মুসলিম লীগ! এর একটি ধারা মুসলিম লীগ ও মওলানা ভাসানীর মাধ্যমে কিছুটা সংক্রমিত হয় বিএনপির ভেতরে! বিশ্ব কাব্যলক্ষ্মীর মুসলমানি ঢঙের যুবরাজ যেমন কবি কাজী নজরুল ইসলাম! তেমনি বিশ্ব রাজনীতিলক্ষ্মীর মুসলমানি ঢঙের যুবরাজ ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তাদের মধ্যে এই আত্মিক যোগাযোগটি স্থাপিত হয়েছিল এ কারণেই! ।
পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক কারণে বিএনপি এখন ইসলামি ঢং থেকে দূরত্ব রাখতে গিয়ে এই মুসলমানি ঢংটিও খুঁইয়ে ফেলার ঝুঁকিতে পড়ে গেছে! ইতিহাসচর্চায় বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের পদাঙ্ক অনুসরণের চেষ্টা করছে! বিএনপির একটা অংশও ইতিহাসের সবক নিতে ১৯৫২ সালের আগে যেতে চান না।
আমাদের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের কাজী নজরুল ইসলামের ‘বড়র পীরিতি বালির বাঁধ’ পড়তে হবে। কাজী নজরুল ইসলামের সেই লেখাগুলোই আমাদের বলে দেবে, কেন আমাদের পূর্বপুরুষদের শতকরা ৯০ ভাগ পাকিস্তান সৃষ্টির পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন!
চ্যাটজিপিটি কে যে ‘ভাইল’ আমি মেরেছি!
আল্লাহ মানুষকে বেহেশতের যে ওয়াদা করেছেনÑতা নাকি একেকটা পৃথিবীর সমান। বর্তমান বিজ্ঞান জানাচ্ছে, এটি মহান স্রষ্টার জন্য কোনো ব্যাপারই না! তাই আমারও ইচ্ছা হলো, যদি একখান পেয়ে যাই, তবে সেটার দাম-দুরজ কেমন হবে তা জানতে। সেই খেয়াল থেকে আমি চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞেস করলাম, সারা পৃথিবীটার দাম কত হবে (ইউএস ডলারে)? যন্ত্র জবাব দেয়, সারা পৃথিবী কেনার মতো কোনো কাস্টমার নেই । প্রত্যুত্তরে আমি বললাম, ‘বেশি কথা বইলো না। আমি কিনব, তুমি যেভাবেই পারো, হিসাব কইরা বের করো!’ আমার ধমক বা ‘ভাইল’ খেয়ে আধুনিক টেকনোলজির বিস্ময় আমার সম্মুখে নিম্নোক্ত হিসাবটি হাজির করলÑ
পৃথিবীর সম্পদের আনুমানিক মূল্য (মার্কিন ডলারে) :
এখানে মনে রাখতে হবে ১ হাজার বিলিয়নে ১ ট্রিলিয়ন, ১ হাজার ট্রিলিয়নে ১ কোয়াড্রিলিয়ন, আবার ১ হাজার কোয়াড্রিলিয়নে ১ কোইন্টিলিয়ন। একটু সময় নিয়ে দামগুলো দেখেন।
১. ভূমি ও রিয়েল এস্টেট : পৃথিবীর মোট স্থলভাগ : প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। বাজারমূল্য ভিন্ন ভিন্ন হলেও গড় হিসাবে প্রতি একর প্রায় ১০ হাজার ডলার ধরা যায়। মোট ভূমির মূল্য ৩৫০ ট্রিলিয়নÑ৫০০ ট্রিলিয়ন ডলার।
২. মিষ্টি পানি (Freshwater) : পৃথিবীতে মোট মিষ্টি পানি : প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনকিলোমিটার। লবণাক্ত পানি পরিশোধনের (desalination) খরচ প্রতি ঘনমিটার ০.৫০ ডলার। মোট মূল্য ১৭ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার।
৩. মহাসাগর (লবণাক্ত পানি + সামুদ্রিক সম্পদ) : মোট সমুদ্রের পানি : প্রায় ১.৩৫ বিলিয়ন ঘনকিলোমিটার। যদি শুধু ডিস্যালিনেশন খরচে ধরা হয় (০.৫০ ডলার/মিটার³) : → মোট মূল্য ≈ ৬৭৫ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার। মাছ, জৈব-ঔষধি সম্পদ ইত্যাদি আরো কয়েক দশ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ হতে পারে, কিন্তু পানির মূল্যের তুলনায় খুবই কম।
৪. বায়ুমণ্ডল মোট ভর : প্রায় ৫.১৫×১০¹⁸ কেজি। অক্সিজেন (২১%) ≈ ১.০৮×১০¹⁸ কেজি। বাজারদর ০.২০ ডলার/কেজি। → মোট ≈ ২১৬ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার। নাইট্রোজেন (৭৮%) ≈ ৪×১০¹⁸ কেজি। বাজারদর ০.১৫ ডলার/কেজি। → মোট ≈ ৬০০ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার। মোট বায়ুমণ্ডলের মূল্য ≈ ৮০০-৯০০ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার।
৫. জ্বালানি সম্পদ : প্রমাণিত জীবাশ্ম জ্বালানি মজুত (কয়লা, তেল, গ্যাস) : ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার।
ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম : ৩০ ট্রিলিয়ন ডলার।
মোট ≈ ১৩০ ট্রিলিয়ন ডলার।
৬. খনিজসম্পদ : পরিচিত খনিজ (লোহা, তামা, সোনা, রেয়ার আর্থ ইত্যাদি) :→ আনুমানিক ≈ ২০০-৩০০ ট্রিলিয়ন ডলার। শুধু সোনা (খননকৃত ও অবশিষ্ট মজুত মিলিয়ে) : ≈ ১২-১৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
৭. প্রাকৃতিক সেবাগুলো (Ecosystem Services) : বন, নদী, মাটি, জীববৈচিত্র্য মানুষের জন্য বিনামূল্যে নানা সেবা দেয় (পরাগায়ণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, কার্বন শোষণ ইত্যাদি)। এর বার্ষিক মূল্য আনুমানিক ১২৫-১৫০ ট্রিলিয়ন ডলার। যদি এটিকে স্থায়ী সম্পদ হিসেবে ধরা হয় → ≈ ৪–৫ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার।
মোট আনুমানিক হিসাব
ভূমি : ৪০০ ট্রিলিয়ন ডলার, মিষ্টি পানি : ১৭ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার, মহাসাগর (লবণাক্ত পানি) : ৬৭৫ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার।
বায়ুমণ্ডল : ৮৫০ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার, জ্বালানি সম্পদ : ০.১৩ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার, খনিজসম্পদ : ০.২৫ কোয়াড্রিলিয়নডলার, প্রাকৃতিক সেবা : ৪.৫ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার, মোট আনুমানিক ≈ ১,৫০০-১,৬০০ কোয়াড্রিলিয়ন ডলার (≈ ১.৫ কোইন্টিলিয়ন ডলার)।
এগুলো ধরে নেওয়া হয়েছে, সবকিছুই আজকের বাজারদরে উত্তোলনযোগ্য। প্রযুক্তি, চাহিদা ও দুষ্প্রাপ্যতার ওপর এই মান অনেকটা নির্ভরশীল। অনেক সম্পদ (যেমন বায়ু, পানি ও জীববৈচিত্র্য) আসলে অমূল্য, কারণ মানবজীবনের জন্য অপরিহার্য। অর্থাৎ, যদি পৃথিবীর সব পরিচিত সম্পদকে বাজারদরে একসঙ্গে বিক্রি করা হয়, তবে এর মোট আনুমানিক মূল্য হবে প্রায় ১.৫ কোইন্টিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পৃথিবীতে এখনো একজন ট্রিলিয়নিয়ার হতে পারেননি। কিন্তু প্রত্যেক বেহেশতিই একেকজন কোইন্টিলিয়নিয়ার! যারা এই দেড় কোইন্টিলিয়ন ডলারের গল্পটিকে বিশ্বাসের গভীরে নিয়ে গেছেন, তাদের কাছে বাংলাদেশের মতো একটি দেশের মন্ত্রী, এমপি অতি তুচ্ছ ব্যাপার।
এই দুনিয়ায় নিজের ঘামে কিংবা জনগণের পকেট কেটে এক-দুই বিলিয়ন ডলার অর্জন করতে পারলেও তা ভোগ করার জন্য সর্বোচ্চ ফুরসত পাওয়া যায় ৮০ বা ৯০ বছর। অথচ এক-দেড় কোইন্টিলিয়ন ডলারের সম্পদ উপভোগের সময় শত শত কোইন্টিলিয়ন বছর নাÑসেই সময়ের আর শেষ নেই । ধর্মবিশ্বাসী লোকগুলোকে বোকা বলা হলেও আসল বোকা কে?
অনেকের এত ভালো কাজ যার প্রতিদান এই স্বল্প সময়ের ও স্বল্পসম্পদের এই দুনিয়ায় সম্ভব না। আবার জনগণের পকেট থেকে বিলিয়ন ডলার লুট করেছে, সবকিছু জানার পরও এদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
এ কারণেই পরকালের এবং শেষ বিচার দিবসের প্রয়োজনীয়তা অনিবার্য ঠেকে!
লেখক: কলামিস্ট