Image description

এম আবদুল্লাহ

 

এক.

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বছরান্তে এবারের ১৫ আগস্ট কী বার্তা দিল, তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করতে চাই। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। তার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত ও গুরুত্ববহ দিন ১৫ আগস্ট হাজির হয়েছিল। তখন অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শক্তিগুলো ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। সরকার শোক দিবস বাতিল করে। এছাড়া দিবসটি কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় বাধ্যতামূলক অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠানও এড়িয়ে যায়। চব্বিশের ১৫ আগস্ট ছিল দেড় যুগের মধ্যে একেবারেই ভিন্ন আবহের।

২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় থেকেই মুজিব-বন্দনা নতুন মাত্রা পায়। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিকভাবে কেবল ১৫ আগস্টই নয়, পুরো আগস্ট মাসকেই শোকে মুড়িয়ে দেয়। টিভিপর্দা ও সংবাদপত্রের পাতায় মাসজুড়ে শোকের মাতম চলে। শত শত কোটি টাকা শ্রাদ্ধ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শোকগাথা প্রকাশ করে সংবাদপত্রে। শোকের নামে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানে ব্যয় করা যেত বেহিসেবিভাবে। অনেক অনুষ্ঠান উৎসবের আমেজ পেতেও দেখা গেছে। অনেকটা কনসার্ট টাইপের। বিগত বছরটি ছিল দেড় যুগের ব্যতিক্রম। গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পর ফের পতিত ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের শোকের মাতম সৃষ্টির চেষ্টা করতে দেখা গেল। চব্বিশের ১৫ আগস্টে যাদের সামাজিক মাধ্যমের ওয়ালে শোকের কোনো পোস্ট দেখা যায়নি, সাহস করেনি, তারা এবার বেশ জোরেশোরেই ‘পিতার বন্দনা’ করে পোস্ট দিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমেও এক বছর আগের চেয়ে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। এক বছর আগে যেসব সংবাদপত্র প্রথম পৃষ্ঠায় নিচের দিকে সিঙ্গেল কলামে ১৫ আগস্টের সংবাদ প্রকাশ করেছিল, তারা এবার ওপরের দিকে দু-তিন কলামে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে। অন্তত একটি সংবাদপত্র সেকেন্ড লিডের মর্যাদা দিয়েছে। সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। যেসব সংবাদপত্র চব্বিশে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীর কোনো সংবাদই দেয়নি, তারা এবার শেষ পৃষ্ঠা কিংবা ভেতরে প্রকাশ করেছে। বছরের ব্যবধানে এই যে পরিবর্তন, তার হেতু কী তা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো কি বিশ্লেষণ করেছেন? বুঝতে কি অসুবিধা হচ্ছে, নিজেদের মধ্যকার বিভেদ-বিভাজনের সুযোগে পতিত আওয়ামী লীগ পুরোনো কায়দায় মুজিবের ওপর ভর করে মাথা তুলতে চাইছে। সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দলে দলে ৩২ নম্বরে গিয়ে এবং টুঙ্গিপাড়ার মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে আহ্বানে কেউ সাড়া দেয়নি। ভাইরালপ্রবণ দু-চারজন ৩২ নম্বরের দিকে যেতে চেয়ে প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। অবশ্য তাদের আসল উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে। আলোচিত হয়েছেন। মিডিয়া কভারেজ পেয়েছেন। তবে টুঙ্গিপাড়া ছিল একেবারে সুনসান।

শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতীয় নেতা। মুক্তিযুদ্ধে তার সরাসরি অংশগ্রহণ বা অবদান না থাকলেও স্বাধিকার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি যেমন বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ ১৫ বছরে রচনা করেছেন, শেষে ছাত্রনেতারা অসীম সাহসে বুক চিতিয়ে চূড়ান্ত লড়াইয়ের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন, তেমনি মুজিব স্বাধিকার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তার চেয়েও বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল মওলানা ভাসানীসহ তৎকালীন অন্যান্য জাতীয় নেতাদের। একাত্তরের মার্চে শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশের পরিবর্তে আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত গোটা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য দেনদরবার ও দরকষাকষি করেছেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। শেখ মুজিবের অবদান যতটুকু ততটুকু দিতে কেউ কার্পন্য করত না। ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ট্র্যাজেডিতে সপরিবারে মৃত্যুর দিনটিতে অনুসারী-অনুরাগীরা শোক পালন করবেন, স্মরণ করবেন, শ্রদ্ধা জানাবেন, তাতে দোষের কিছু ছিল না, যদি তাকে একমাত্র ও একচ্ছত্র নেতা হিসেবে চাপিয়ে দিয়ে সবার শোকে কাতর হওয়া বাধ্যতামূলক করা না হতো।

একজন মেজর জিয়া ‘উই রিভোল্ট’ বলে জীবনবাজি রেখে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধ না করলে ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত—এ সত্যটি আওয়ামী লীগ কখনো মানতে চায়নি। ১৫ বছরে জিয়াউর রহমানকে যথাযথ সম্মান না দিয়ে তাকে ভিলেন বানানোর নিরন্তর অপচেষ্টা হয়েছে। ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে কী না করেছে! তার শাহাদাতবার্ষিকীতে মাজারে যেতে দেওয়া হয়নি ভক্ত-অনুরাগীদের। কবরে জিয়ার লাশ নেই, কবর উচ্ছেদ করা হবে—এমন হুমকি চলেছে নিয়মিত। ‘জিয়া উদ্যান’ নামটি পর্যন্ত মুছে ফেলা হয়েছে। শাহাদাতবার্ষিকীতে দোয়া অনুষ্ঠানের তবারকের পাতিল ট্রাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তারা। তার পরিণামই আজ ভোগ করতে হচ্ছে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তিকে।

১৫ বছরে যত লুটপাট ও অপশাসন চালানো হয়েছে, তার সবই জায়েজ করা হয়েছে শেখ মুজিবকে দেবতা বানিয়ে। প্রত্যেকটি জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্ষমতার নিয়ামক শক্তিগুলোকে কব্জায় নেওয়া হয়েছে—‘ক্ষমতায় না থাকলে শেখ মুজিবকে মুছে ফেলা হবে, দেশ জঙ্গি রাষ্ট্র হয়ে যাবে’ এ জুজু দেখিয়ে। যুক্তি ছিল—‘পিতা’কে রক্ষায় যেভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে। ‘দমে দমে পিতা নেই তো দেশও নেই’—এমন একটা খোঁড়া যুক্তি দেওয়া হয়েছে। এককথায় মরহুম শেখ মুজিবকে ফ্যাসিবাদী শাসন জারি রাখার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফ্যাসিজমের আইকনে পরিণত করা হয়েছিল। তার অনিবার্য ফল এখন ভোগ করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী গত এক বছরে মুজিবচর্চায় বাড়াবাড়ি হয়নি, তাতে দেশ কি রসাতলে গেছে? বরং এগিয়েছে। জনজীবনে স্বস্তি ফিরেছে।

যারা এবার শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক-শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে দুটি শ্রেণির মানুষ দেখা গেছে। একশ্রেণির মুজিবভক্ত, তারা সত্যি সত্যি তাকে দেবতাজ্ঞান করেন। অতিমানব হিসেবে তার কোনোই ভুলত্রুটি ছিল, তা মানেন না। ফলে তাদের নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে থাকা মুজিবের প্রতি অন্তর থেকেই শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আরেকটি শ্রেণি দেখা গেছে—তারা মূলত ধান্ধাবাজ। গত ১৫ বছরের লুটতন্ত্রের অংশীদার। নিমক হালালির অংশ হিসেবে তারা প্রবন্ধ লিখেছেন কিংবা নিদেনপক্ষে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তারা আশাবাদী, নিকট ভবিষ্যতে শেখ হাসিনা রাজনীতি ও ক্ষমতার পাদপীঠে ফিরবেন। ফলে মুজিবের শোক দিয়ে অন্তত তার সঙ্গে আছেন—এটা জানান দিয়ে রাখতে চেয়েছেন। এ শ্রেণিটি ভালো করে জানেন, দুঃসময়ে পাশে থাকা মানুষদের শেখ হাসিনা মূল্যায়ন করতে জানেন, হাত খুলে প্রতিদান দেন। মূলত ভবিষ্যতে আর প্রাপ্তির আশায় মতলববাজ মুজিবপ্রেমিকরা শোকগ্রস্ত হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে চেয়েছেন।

গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির জন্য বার্তা হচ্ছে—শেখ হাসিনা বা পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি আওয়ামী লীগ ফেরার সম্ভাবনা দেখাতে পারলে সাময়িকভাবে গর্তে লুকিয়ে থাকা কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা লীগ দোসররা কিন্তু বেরিয়ে আসতে কালবিলম্ব করবে না। সুযোগের প্রতীক্ষায় তারা প্রহর গুনছে। অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে জনবিচ্ছিন্ন করার মিশনে আছে। তাদের চরিত্র হনন করে মানুষের সহানুভূতি যাতে না পায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো মতভিন্নতায় বিভেদ-বিষোদ্গার পরিহার করে ঐক্য অটুট রাখতে না পারলে পরিণাম হবে মারাত্মক। কেউই ছাড় পাবে না।

 

দুই.

রাজনীতি নির্বাচনমুখী হতে চলেছে। আগামী দিনগুলোয় নির্বাচনকেন্দ্রিক নানা মেরূকরণ রাজনৈতিক অঙ্গনকে সরগরম করে তুলবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। দলগুলো প্রার্থী বাছাই, ইশতিহার প্রণয়ন, ভোটের বাজারে প্রাধান্য বিস্তারের কৌশল নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে একটি বিষয়ে সংকটের আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে।

‘জুলাই সনদ’ ইস্যুতে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ প্রবল। সহসা এ বিষয়ে একটি সুরাহা না হলে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

১১টি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক জায়গায় আনতে গঠিত হয় ঐকমত্য কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কমিশনের প্রধান। সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ। কমিশন ৩২টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে। আলোচনার প্রথম ধাপে ১৬৬ প্রস্তাবের ৬২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২০টিসহ মোট ৮২টি প্রস্তাবে ঐকমত্য গঠনের মধ্যে দিয়ে ‘জুলাই সনদের’ খসড়া তৈরির ভিত্তি তৈরি হয়।

৮২টি ঐকমত্য প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে সনদের প্রাথমিক খসড়া ২৮ জুলাই দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। ওই খসড়ায় কমিশন দলগুলোর কাছে ‘২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার’ প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল।

সনদের সর্বশেষ খসড়া অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিতে বা অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে বলা হবে, যেন এটি বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে পুরোপুরি আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। যদি সনদের কোনো শব্দ, বাক্য বা নীতি সংবিধান বা অন্য কোনো আইন-বিচারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে সনদের বিধানই অগ্রাধিকার পাবে—এমন অঙ্গীকার প্রত্যাশা করছে ঐকমত্য কমিশন।

এর পাশাপাশি ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আরো একটি বিষয়ে অঙ্গীকার চায়, যেটি হলো গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক সংগ্রামের চূড়ান্ত পরিণতি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্বের সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, জুলাই সনদের খসড়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দু-এক দিনের মধ্যে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন তারা।

জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘জুলাই সনদ’কে একটি বাধ্যতামূলক আইনি দলিল হিসেবে উপস্থাপনের কথা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিবেচনা করছে।

‘জুলাই সনদ’ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে দলগুলো এখনো দুই মেরুতে। একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পথ সুগম করতে সম্মতি চাইছে কমিশন। অধ্যাদেশে থাকবে বিশেষ সাংবিধানিক অঙ্গীকার, যা অন্য সব আইন ও আদালতের রায়ের ঊর্ধ্বে ‘জুলাই সনদের’ সর্বোচ্চ আইনগত প্রাধান্য নিশ্চিত করতে চাইছে। ঐকমত্য কমিশনের এ চিন্তায় এখন পর্যন্ত বিএনপির তরফে সায় মেলেনি। বিএনপি চাইছে এটি একটি জেন্টেলমেন্ট এগ্রিমেন্ট হিসেবে থাকবে। নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সরকার ধাপে ধাপে সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে।

সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, দলগুলোর কাছ থেকে আরো কিছু প্রতিশ্রুতি নেওয়ার পরিকল্পনা আছে ঐকমত্য কমিশনের। এর মধ্যে আছে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, আন্দোলনে নিহতদের জন্য ন্যায়বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত থাকার কথা নয়। বিএনপি এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জুলাই সনদের বিষয়ে দলটি প্রয়োজনে আরো ছাড় দেবে। আশা করা যায়, একদিকে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দল, অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনসহ কতিপয় দল যদি নিজ নিজ অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে জুলাই সনদ গ্রহণের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের গর্বে লালিত জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারেন, তবেই আগামী নির্বাচনের পথ মসৃণ হবে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট