এই রক্ত কী কারও চোখে পড়ে না?
সাংবাদিকের রক্ত যেন শস্তা। তাদের গায়ে হাত তুললে কিছুই হয় না। গ্রেপ্তার নেই, ধরপাকড় নেই। নির্বাচন আসলেতো কথাই নেই। প্রতিটি নির্বাচনেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন সাংবাদিকরা। সর্বশেষ ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সেই একই ঘটনা। প্রচারণা থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিনও সাংবাদিকরাই টার্গেট হয়েছেন। গোপীবাগে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের প্রচারণায় সংঘর্ষের সময় সংবাদ কাভার করতে গিয়ে হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিলেন সময় টিভির ক্যামেরাপারসন আশরাফুল ইসলাম।
আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী। ওই অবস্থাতেই সংবাদ কাভার করেছেন তারা। ঘটনা ওই পর্যন্তই। প্রতিকার তো দূরের কথা, প্রতিবাদ পর্যন্ত জানানো হয়নি তেমন।
আর ঢাকা সিটি নির্বাচনের দিন যেনো সন্ত্রাসীদের প্রধান টার্গেটই ছিলেন সাংবাদিকরা। ওইদিন পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ সাংবাদিক। পৃথক ভোটকেন্দ্রে ওইদিন হামলায় আহত হন- অনলাইন নিউজ পোর্টাল আগামি নিউজ.কমের রিপোর্টার মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফটো এজেন্সি প্রেস বাংলা এজেন্সি (পিবিএ)-এর বিশেষ প্রতিনিধি ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের স্থায়ী সদস্য জিসাদ ইকবাল, জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান আলোকচিত্রী শেখ হাসান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদক মাহবুব মমতাজি, ডেইলি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদক নূরুল আমিন এবং পরিবর্তন ডটকমের ফটো সাংবাদিক ওসমান গনি।
এরমধ্যে রক্তাক্ত মোস্তাফিজুর ছবি দেখে আঁতকে ওঠেছে সাধারণ মানুষ। আর ভোট কেন্দ্রে কেন্দ্রে হুমকি-ধামকি, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া তো ছিলোই। সবই হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে। সুমনের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু উল্টো দেখা যাচ্ছে, তাকে হাসপাতালে গিয়েই হুমকি দেয়া হয়েছে। ওদিকে, সাংবাদিকদের হেনস্তা করার ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করায় উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।
পুরো পরিস্থিতে ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকে গতকাল একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সম্পাদক নঈম নিজাম। তিনি লিখেছেন, সিটি ভোটে পেশাগত কাজের সময় সাংবাদিকরা হামলার শিকার হয়েছেন। সাংবাদিকদের হামলা করলে কিছুই হয় না। এমনকি সাংবাদিক সংগঠনগুলো কিছু বলে না। এভাবেই কী চলতে থাকবে? তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী সকল সন্ত্রাসীকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। **(সাংবাদিক সমাজ ব্যস্ত ফেসবুকে অভিনন্দন নিয়ে)। আজ আরেক স্ট্যাটাসে তিনি রক্তাক্ত সাংবাদিকের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, এই রক্ত কী কারও চোখে পড়ে না? ভোটের দিন সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী সকল সন্ত্রাসীকে আটক করতে হবে ।