Image description
'মুসলিম' বাদ দিয়ে ঢাবির তিন হলের নাম বিকৃত করেছিল ছাত্রলীগ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, ফজলুল হক মুসলিম হল এবং মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের টুকরো টুকরো নাম ব্যবহার করতো বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তারা পুরো নাম থেকে 'মুসলিম' বাদ দিয়ে 'সলিমুল্লাহ মুসলিম হল' কে 'সলিমুল্লাহ হল', 'ফজলুল হক মুসলিম হল' কে 'ফজলুল হক হল' এবং 'মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল' কে 'মুক্তিযোদ্ধা হল' ব্যবহারের প্রচলন করেছে বলে দাবি করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, ঢাবি হল শাখা ছাত্রলীগের কমিটির নির্বাচন গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফেস্টুন এবং বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের মধ্যে তিনটি হলের খণ্ডিত নাম ব্যবহার করেছিল ছাত্রলীগ। বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা বলেন, ছাত্রলীগ ইচ্ছাকৃতভাবে হলগুলোর নাম থেকে 'মুসলিম' বাদ দিয়েছে। হলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তুহিন এমরান বলেন, ''ফজলুল হক মুসলিম হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হল-এ দুটি হলের নামেই 'মুসলিম' শব্দটি আছে। প্রগতিশীলতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছাত্রলীগ কেন তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হলের টুকরো টুকরো নাম ব্যবহার করেছে সেটি জানতে ইচ্ছে হচ্ছে।'' তুহিন আরও বলেন, ''বরং মনে হচ্ছে, মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে ছাত্রলীগ প্রগতিশীল সংগঠন হিসেবে নিজের নাম তৈরি করতে পারেনি।" এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি সম্মেলনের জন্য ১৮টি হলের জন্য আলাদা আলাদা ১৮টি ফেস্টুনের ডিজাইন শেয়ার করেন ছাত্রলীগ ঢাবি শাখার তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। সেখানেও খণ্ডিত নামের ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে। যদিও সেসময় সাদ্দাম হোসেন দাবি করেছিলেন, এটি হলগুরো সংক্ষিপ্ত নাম। তবে এ বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এক ছাত্র বলেন, তারা হলের সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে 'এসএম হল' ব্যবহার করেন। এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের ছাত্ররা বলেন, তারা তাদের হলের এমন সংক্ষিপ্ত নাম কখনো শোনেননি। অন্যদিকে, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বাসিন্দারা বলেন, তারা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলকে সংক্ষেপে 'জিয়া হল' বলেন। এ বিষয়ে ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ''১৯৭২ সালে হলের নাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট মুসলিম শব্দটি সরিয়ে নেয়। ২০০৪ সালে বিএনপির ক্ষমতার সময়ে মুসলিম শব্দটি আবার আনা হয় এবং এখন পর্যন্ত হলের নামের সাথে মুসলিম শব্দটি যুক্ত আছে। ছাত্রলীগ মুসলিম শব্দটি ব্যবহার না করলেও নামের পরিবর্তন তো হবেনা।'' এ বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রশাসনিক ভাবে সবসময়ই হলের পুরো নাম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে হলের নাম পরিবর্তন কিংবা ছোট করে ব্যবহারের নিয়ম নেই। এবং তারা নিয়ম ভাঙেনি। ছাত্রলীগের কর্মীরা ব্যক্তিগত পরিসরে কী নাম ব্যবহার করতো সেটি সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না। এমনকি হলের কোনো কাজে ছাত্রলীগকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিতে তিনি সরাসরি দেখেন নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক 'মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক কর্মকর্তা বলেন, ''ছাত্রলীগের কর্মীরা জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করবে না সেটিই স্বাভাবিক। তাদের দলের ক্ষমতাকে আরও জোরালো করতে তারা মিটিং মিছিলে জিয়াউর রহমানের নাম এড়িয়ে যেত।''