Image description
আপনি কি সকাল সাড়ে ৮টার পর নাশতা করেন
ঘুম থেকে ওঠার ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে সকালে নাশতা খাওয়ার সঠিক সময়। সাধারণত সকাল ৭টা থেকে ৮ টা ৩০ এর মধ্যে নাশতা খাওয়ার উপযুক্ত সময় বলে মনে করা হয়। যতটা সম্ভব সকালে ঘুম থেকে উঠে যাওয়ার পর দ্রুত স্বাস্থ্যকর নাশতা খেলে শরীরের মেটাবলিজম সক্রিয় হয় এবং সারা দিন শক্তি পাওয়া যায়। সঠিক সময়ে নাশতা করলে মনোযোগ ও মানসিক সংবেদনশীলতা বাড়ে সঠিক সময়ে নাশতা করলে মনোযোগ ও মানসিক সংবেদনশীলতা বাড়েছবি: কবির হোসেন সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে নাশতা করার উপকারিতা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এ সময়ের মধ্যে সকালের নাশতা করলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস খুব সকালে নাশতা করলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস পায়। অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন কোষে ইনসুলিন প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এ কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক থাকে। উন্নত বিপাক হার সকালের নাশতা আমাদের দেহে দক্ষতার সঙ্গে বিপাক কার্যক্রম বাড়ায়। তাই এ সময়ে খাওয়া নাশতা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। তৃপ্তিবর্ধক একটি স্বাস্থ্যসম্মত নাশতা আপনাকে অনেকক্ষণ তৃপ্তি দেবে, যা সারা দিন কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করবে। বোধশক্তি উন্নত এ সময়ে নাশতা মনোযোগ ও মানসিক সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। দেরিতে নাশতা করলে অতিরিক্ত খিদে পেয়ে মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়। এবার জেনে নেই সকালের নাশতা সাড়ে ৮টা বা ৯টার পর, অর্থাৎ দেরিতে করলে কী কী সমস্যা হতে পারে— ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে শরীরে গ্লুকোজ টলারেন্স বেড়ে যায়, যা একসময়ে গিয়ে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে। ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ওজন বৃদ্ধি দেরিতে নাশতা করার ফলে অতিরিক্ত খিদে পেয়ে মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়। ফলে ওজন বেড়ে যায়। হার্টের সমস্যা হার্ট অ্যাটাকের মতো বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। শরীরকে সচল রাখতে সকালে খাবার প্রয়োজন। হজমক্ষমতা হ্রাস শরীরকে সচল রাখতে সকালে খাবার প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে দেরিতে খাবার গ্রহণের ফলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সৃষ্টি হয় এবং হজম কম হয়। বুদ্ধি কমে যায় সঠিক সময়ে নাশতা না করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়। এতে ব্রেনে পুষ্টির ঘাটতি হতে শুরু করে। ফলে মস্তিষ্কে কর্মক্ষমতা কমে ও বুদ্ধিও কমে। পুষ্টির অভাব অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস যাঁরা প্রতিনিয়ত দেরি করে নাশতা করছেন কিংবা খাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে প্রদাহ ও ফ্রি রেডিক্যাল সৃষ্টি হয় বেশি। সকালের স্বাস্থ্যসম্মত নাশতায় ক্যালসিয়াম ও আঁশজাতীয় খাবার থাকলে ভালো। যেহেতু রাতে ঘুমের কারণে অনেকক্ষণ আমাদের পেট খালি থাকে, তাই সকালে নাশতাটা যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অধিক ক্যালরিযুক্ত চিনি ও চর্বির তৈরি খাবার খাবেন না। পরিমাণমতো নাশতা করবেন, যেখানে প্রোটিন, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ও হেলদি ফ্যাট উপযোগী থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের স্বাস্থ্যসম্মত নাশতায় ক্যালসিয়াম ও আঁশজাতীয় খাবার থাকলে ভালো। সঠিক সময়ে স্বাস্থ্যসম্মত নাশতা আপনার শারীরিক শক্তি, মানসিক মনোযোগ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, হার্ট সুরক্ষিত এবং সর্বোপরি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। সাজিয়া মাহমুদ, কনসালট্যান্ট পুষ্টিবিদ, প্যানকেয়ার হাসপাতাল।