অং সান সু চির ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা
মিয়ানমারের কারাবন্দী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে দেশের সামরিক জান্তা স্বাস্থ্যগত কারণে মুক্তি দিয়েছে।
রোববার দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের একজন প্রবীণ নেতা, ৭২ বছর বয়সী যা মায়েন্ট মং, যিনি ক্যান্সারে ভুগছেন। তিনি সামরিক বাহিনীর জন্য একটি হুমকি ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাকে ২০২১ সালে সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার করে দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এনএলডির এক সিনিয়র সূত্র এএফপিকে জানান, ‘তার স্বাস্থ্যের কারণে আজ তার জন্য ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে।’
তিনি নিরাপত্তার কারণে পরিচয় গোপন রেখেছেন।
তিনি আরো জানান, যা মায়েন্ট মং মান্দালয়ের এক হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন, যেখানে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত।
তিনি বলেন, ‘ তার শারীরিক অবস্থা ঝুঁকির মধ্যে আছে, উন্নতি বা অবনতি দু’টির সম্ভাবনাই ৫০ ভাগ। আমরা আরো তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি।’
যা মায়েন্ট মং মান্দালয় অঞ্চলের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশে ১০ বছর স্থায়ী গণতন্ত্রের প্রচেষ্টা উৎখাত করার কিছু দিন পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে ভিন্নমত দমনে জান্তার নিপীড়ন এনএলডির শীর্ষ নেতৃত্ব প্রায় শূন্য করে দিয়েছে।
অভ্যুত্থানের কয়েক মাস পর সাবেক এনএলডি মুখপাত্র এবং সু চির ঘনিষ্ঠ নিয়ান উইন দেশদ্রোহের অভিযোগে সামরিক হেফাজতে থাকাকালে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
আরেকজন সংসদ সদস্যকে ২০২২ জান্তা ফাঁসি দেয়, যা ছিল কয়েক দশক পর মিয়ানমারে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা।
গত বছর মার্চ মাসে জান্তা নতুন নির্বাচনী আইনের অধীনে পুনরায় রেজিস্টার করতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে এনএলডিকে বিলুপ্ত করে। এর ফলে এনএলডি আগামী নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হবে, যে নির্বাচন ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জান্তা ইঙ্গিত দিয়েছে।
সু চিকে দুর্নীতি থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে ২৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। সু চির বয়স ৭৯।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার রুদ্ধদ্বার বিচারকে প্রহসনমূলক বলে বর্ণনা করে বলছে, বিচারের উদ্দেশ্য ছিল তাকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়া।
গত মাসে ইতালির গণমাধ্যম জানায়, ক্যাথলিক ক্রিস্টিয়ানদের ধর্মীয় প্রধান পোপ ফ্রান্সিস সু চিকে ভ্যাটিকানে আশ্রয় দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। অং সান সু চি ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের আগে সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা