প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে ভয়াবহ পানি সংকট দেখা দেয় জামালপুর পৌরসভায়। পর্যাপ্ত পানি ওঠে না গভীর নলকূপে। পানির চাহিদা মেটাতে জনস্বাস্থ্যের স্থায়ী পরিকল্পনায় আট কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ১১৫ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ওভার হেড ট্যাংক ও পানি সাপ্লাই প্রজেক্ট। কিন্তু পৌরসভার গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতায় আজও সুফল বয়ে আনেনি প্রকল্প দুটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভার বগাবাইদ বোর্ডঘরে পৌরবাসীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে পাঁচ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট ও ২০২১ সালের মে মাসে ওভার হেড ট্যাংক নামে দুটি মেগা প্রকল্প চালু করে জামালপুর জনস্বাস্থ্য বিভাগ। সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি দুটি চালু হলে প্রতিদিন দুই লাখ ২০ হাজার লিটার পানির চাহিদা মিটতো পৌরবাসীর। কিন্তু পৌরসভার অবহেলায় সময়মতো পানির পাম্প ও মেশিন চালু না করা এবং পানি সরবরাহ না করায় অকেজো হয়ে গেছে অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি। ফলে বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে না পৌরবাসীর।
জনস্বাস্থ্য অফিসের অ্যাডমিন জাহাঙ্গীর কবীর জানান, জামালপুরে ১২টি প্রকল্পে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু পৌরসভার অবহেলায় ওভার হেড ট্যাংক ও ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট থেকে কোনো সুফল পাচ্ছেন না পৌরবাসী।
বগাবাইদ এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান লিটন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শীতের সময় নলকূপ ও মোটরের পানির লেয়ার নিচে নেমে যায়। তখন পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। ট্যাংকটি চালু হলে পানির চাহিদা পূরণ হতো।’
নাগরিক অধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘জনস্বার্থ কাজটি সমাপ্ত করে পৌরসভাকে হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু পৌরসভার গাফিলতিতে জনগণ এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
জামালপুর জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, কাজটা শেষ করে পৌরসভাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু পৌরসভার মেইনটেন্যান্সের অভাবে প্রকল্পটি থেকে কোনো সুবিধা পেল না পৌরবাসী। যা খুবই দুঃখজনক।’
এ বিষয়ে জামালপুর পৌর প্রশাসক মৌসুমি খানম বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি, বিষয়টি জানা নেই। আমরা এখন শুধু জনবান্ধবমূলক কাজগুলো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রকল্প দুটির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন